RG Kar Case

সঞ্জয়ের ফাঁসির শাস্তি চেয়ে রাজ‍্যের আবেদনকে কোর্টে চ‍্যালেঞ্জ করল সিবিআই! পাল্টা ব্যাখ‍্যা দিলেন এজি

শিয়ালদহ আদালতের রায়কে রাজ্য সরকারের চ্যালেঞ্জ করা নিয়ে বুধবার আপত্তি জানায় সিবিআই। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাজ্য কী ভাবে আবেদন করতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সিবিআই আইনজীবী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৯
আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে হাই কোর্টে রাজ্য সরকার।

আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয় রায়ের ফাঁসি চেয়ে হাই কোর্টে রাজ্য সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আরজি কর-কাণ্ডে শিয়ালদহ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য কি হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারে? বুধবার তা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিলেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য কি না, তা নিয়ে আগামী সোমবার শুনানি হবে হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চে।

Advertisement

শিয়ালদহ আদালতের রায়কে রাজ্য সরকারের চ্যালেঞ্জ করা নিয়ে বুধবার আপত্তি জানায় সিবিআই। দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তি চেয়ে রাজ্য কী ভাবে আবেদন করতে পারে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল (সিবিআই আইনজীবী) রাজদীপ মজুমদার। তাঁর বক্তব্য, সিবিআইও এই মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়ের সর্বোচ্চ শাস্তিই চেয়েছিল। তবে নির্যাতিতার পরিবার, সিবিআই কিংবা দোষী হাই কোর্টের দ্বারস্থ না হলে, রাজ্য কী ভাবে এই আবেদন করতে পারে? তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন ডেপুটি সলিসিটর জেনারেল। উদাহরণ হিসাবে লালুপ্রসাদ যাদবের মামলার প্রসঙ্গও টেনে আনেন তিনি। হাই কোর্টে তিনি জানান, লালুপ্রসাদের মামলার ক্ষেত্রেও রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য হয়নি।

তবে সিবিআই আইনজীবীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত এবং সরকারি আইনজীবী (পিপি) দেবাশিস রায়। লালুপ্রসাদের মামলার সঙ্গে এই মামলার তুলনা টানা সঠিক নয় বলে মনে করছেন তাঁরা। রাজ্যের তরফে জানানো হয়, লালুর ওই মামলার ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে হাই কোর্ট সব মামলা সিবিআইকে তদন্ত করতে দিয়েছিল। রাজ্যের আইনজীবীরা জানান, সিআরপিসি ৩৭৭ এবং ৩৭৮ ধারা অনুসারে রাজ্য সরকার আবেদন করতে পারে।

অ্যাডভোকেট জেনারেলের বক্তব্য, তদন্ত এবং আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। আরজি কর-কাণ্ডের মামলাটির তদন্ত প্রথমে রাজ্যের পুলিশ করেছিল। তার পরে সিবিআইকে হস্তান্তর করা হয়। ফলে রাজ্যের আবেদন গ্রহণযোগ্য হওয়া উচিত বলে আদালতে জানান তিনি।

বুধবার হাই কোর্টে শুনানির সময়ে দোষী সঞ্জয় রায়ের এক আইনজীবীও উপস্থিত ছিলেন। তিনি মামলা লড়তে চান বলে জানান দুই বিচারপতির এজলাসে। তবে সঞ্জয়ের সঙ্গে তাঁকে দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তাতে বিচারপতি বসাক জানান, আইনজীবী চাইলে সঞ্জয়ের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কথা বলতে পারবেন। তাঁকে সেই অনুমতি দিতে হবে। আদালতের ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে দিতে হবে।

সোমবার শিয়ালদহ আদালত আরজি কর-কাণ্ডে দোষী সঞ্জয়ের আমৃত্যু কারাবাসের শাস্তি ঘোষণা করে। বিচারক অনির্বাণ দাস নির্দেশনামায় লিখেছেন, ওই ঘটনাকে ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ হিসাবে বিবেচনা করছেন না তিনি। সোমবার আদালতের শাস্তি ঘোষণার পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, আরজি করের ঘটনাকে তিনি ‘বিরলের মধ্যে বিরলতম’ ঘটনা বলেই মনে করছেন। সঞ্জয়ের ফাঁসির দাবিও তোলেন তিনি। আরজি কর-কাণ্ডে দোষীর সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এর আগেও পথে নেমেছিলেন তিনি। সোমবারই মুখ্যমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে জানান, শিয়ালদহ আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হবে রাজ্য।

সেই মতো পরের দিনই (মঙ্গলবার) মামলা দায়ের করতে চেয়ে হাই কোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। বিচারপতি বসাক এবং বিচারপতি রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ মামলা দায়েরের অনুমতি দেয়। বুধবার সেই মামলা শুনানির জন্য ওঠে দুই বিচারপতির বেঞ্চে।

Advertisement
আরও পড়ুন