Bangla Awas Yojana

আবাসে ‘টাকা দাবি’, ভিডিয়ো ঘিরে তরজা

১৭ ডিসেম্বর রাজ্যের ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই তালিকায় আছেন দুবরাজপুরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের ঘাটগোপালপুরের জরিপোষ বিবি।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩৫

গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

প্রশাসনিক বৈঠক থেকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পেতে কাউকে এক পয়সাও না দেওয়ার বার্তা দিয়েছেন। তার দু’দিনের মধ্যে আবাস প্রকল্পের উপভোক্তা এক বৃদ্ধার থেকে টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। ঘটনার ভিডিয়ো (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। পাল্টা ভিডিয়ো দিয়ে বীরভূমের দুবরাজপুরের ওই তৃণমূল নেতার
দাবি, বিজেপি তাঁকে বদনাম করার চেষ্টা করছে।

Advertisement

১৭ ডিসেম্বর রাজ্যের ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। সেই তালিকায় আছেন দুবরাজপুরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর পঞ্চায়েতের ঘাটগোপালপুরের জরিপোষ বিবি। একা কাঁচা বাড়িতে থেকে কার্যত ভিক্ষা করেই সংসার চালান তিনি। ছড়িয়ে পড়া ভিডিয়োয় বৃদ্ধাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘পঞ্চায়েত সভাপতি (কাজল খান), নেতা জাহাঙ্গির (পঞ্চায়েতের উপপ্রধানের স্বামী) আমাকে ডেকেছিল। বলল, বাড়ি পেয়েছ, টাকা চাই। সবার কাছে ১০ হাজার নিচ্ছি। তোমার কাছে পাঁচ হাজার নেব।’’ এর পরেই বৃদ্ধাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আমি গরিব মানুষ। বললাম, টাকা কোথা থেকে দেব? কিন্তু ওরা বলল, টাকা চাই।’’

ওই এলাকার বাসিন্দা তথা বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলার সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি মোতাহার হোসেন খানের দাবি, ‘‘শাসক দলের তরফে ঢোকঢোল পিটিয়ে প্রচার করা হচ্ছিল, কেউ যেন গরিব উপভোক্তাদের থেকে কাটমানি না নেন। কিন্তু তাতে লাভ কী!’’ ভিডিয়ো ছড়ানোর অভিযোগে বিজেপির দুই কর্মীকে মারধর করা হয়েছে বলেও দাবি মোতাহারের। সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটির সদস্য শীতল বাউড়ি বলছেন, ‘‘কাটমানি ছাড়া তৃণমূল, ভাবা যায় না। এটা
তারই নমুনা।’’

আবাসের টাকা উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে ঢোকার পর থেকেই বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর-সহ নানা জেলায় টাকা চাওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এ নিয়ে এক্স হ্যান্ডলে অভিযোগও তোলেন।

উপপ্রধানের স্বামী জাহাঙ্গিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে পাল্টা ভিডিয়ো দিয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অঞ্চল সভাপতি কাজল খান। তাঁর দাবি, ‘‘ওঁরা বিজেপি করেন। তাই বদনাম করার চেষ্টা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে শাস্তি মাথা পেতে নেব।’’ মারধরের অভিযোগও অস্বীকার করেছে তৃণমূল। কাজলের দেওয়া ভিডিয়ো ক্লিপে (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) একটি চেয়ারে বসে বৃদ্ধাকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘‘চাপ দিয়ে আমাকে ওই কথা বলানো হয়েছিল। আমি ভুল করেছি।’’ বিজেপির অবশ্য দাবি, বৃদ্ধাকে ‘চাপ’ দিয়ে পরে অন্য কথা বলানো হয়েছে।

জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসন তদন্ত করে দেখুক। এমনটা হয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেউ রাজনৈতিক ফায়দার জন্য এটা করেছে কি না, সেটাও দেখা উচিত।’’

Advertisement
আরও পড়ুন