বান্দোয়ানের জঙ্গলে হনুমানের কীর্তি। ফাইল চিত্র।
কিছু দিন থেকেই জঙ্গলে মিলেছে অচেনা বন্যজন্তুর পায়ের ছাপ। জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলি থেকে বেশ কিছু ছাগল-ভেড়া জঙ্গল থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। খুবলে খাওয়া ছাগলের দেহ উদ্ধারের ঘটনাও ঘটেছে পুরুলিয়ার বান্দোয়ানে। এই পরিস্থিতিতে পুরুলিয়ার কংসাবতী দক্ষিণ বনবিভাগের বান্দোয়ান বনাঞ্চলের উদলবনী জঙ্গলে এই কাণ্ড চিতাবাঘ, নেকড়ে বা হায়না জাতীয় কোনও বন্যপ্রাণীর কি না নিশ্চিত হতে ট্র্যাপ ক্যামেরা লাগানো গিয়েছিল।
কিন্তু এলাকায় বাসিন্দা এক হনুমান নাকি সেটি তুলে নিয়ে গিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে! ফলে চিন্তা বেড়েছে বন দফতরের আধিকারিকদের। বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মাটি তিন ফুট উঁচুতে জিওল গাছে এক ধরনের বেল্ট দিয়ে এই ক্যামেরাটি বাঁধা হয়েছিল। সেই ক্যামেরা হনুমান খুলে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ ওই জিওল গাছে যে ধরনের আঁচড় দেখা গিয়েছে, তা থেকে বনবিভাগ মনে করছে এটি হনুমানের কাণ্ড।
যদিও এই ঘটনাকে ঘিরে হাসির রোল উঠেছে এলাকায়। কংসাবতী দক্ষিণের বিভাগীয় বনাধিকারিক (ডিএফও) অসিতাভ চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করা হলে তিনি ‘মিটিংয়ে ব্যস্ত থাকায়’ কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে অরণ্যভবনের এক কর্তা জানালেন, ‘‘হনুমান খুব চালাক-চতুর প্রাণী। ওই ক্যামেরাটি তার কাছে অচেনা বস্তু মনে হয়েছে বা হয়তো ওই ক্যামেরা থেকে আলোর কোনও ঝলকানি হওয়ায় হনুমানটি এই কাজ করে থাকতে পারে।’’
চলতি বছর পুরুলিয়ারই কোটশিলার সিমনি বিটের জাবর পাহাড়ের জঙ্গলে জোড়া চিতাবাঘের উপস্থিতি ধরা পড়েছে ট্র্যাপ ক্যামেরায়। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বান্দোয়ানের জঙ্গলেও ছাগল-শিকার চিতাবাঘের কাণ্ড হতে পারে বলে বন দফতরের আধিকারিকদের একাংশ মনে করছেন। যা নিয়ে দুশ্চিন্তা রয়েছে বনবিভাগের। কারণ উদলবনী জঙ্গলের কাছাকাছি জনবসতি রয়েছে। এবং অনেকেই জীবিকা নির্বাহের জন্য বা গবাদি পশু চরানোর জন্য ওই পাহাড়ের জঙ্গলে আসেন। যদিও এই বিষয়ে গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে প্রচার চালানো হচ্ছে। প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২০ জুন কোটশিলা বনাঞ্চলের টাটুয়াড়া এলাকায় একটি চিতাবাঘ লোকালয়ে চলে আসার পর তাকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন স্থানীয় গ্রামবাসীদের একাংশ। এ বার তাই গোড়া থেকেই বাড়তি সতর্ক বনবিভাগ।