(বাঁ দিকে) নরেন্দ্র মোদী, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডন দিকে)। —ফাইল ছবি।
তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতের আঙুল কেমন আছে, মঙ্গলবার সংসদে দেখা হতেই তা জানতে চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাল্টা সৌজন্যে মোদীরও স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন লোকসভায় তৃণমূলের সংসদীয় দলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ।
সংবিধান দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সংসদে প্রবেশ করছিলেন মোদী। একেবারে সামনেই ছিলেন কল্যাণ। সেই সময়েই কল্যাণকে দেখে মোদী জানতে চান, ‘‘আপনার আঙুল কেমন আছে (অঙ্গুঠা ক্যায়সা হ্যায়)?’’ জবাবে কল্যাণ বলেন, ‘‘এখন একদম ঠিক আছে। আপনি কেমন আছেন?’’ মোদীও ঘাড় নেড়ে হেসে জানান, ভাল আছেন। এই কুশল বিনিময়ের পরেই রাষ্ট্রপতিকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। এ প্রসঙ্গে পরে কল্যাণ বলেন, ‘‘এটাই তো শিষ্টাচার। এটাই তো সৌজন্য।’’
মাস দেড়েক আগে ওয়াকফ বিল সংক্রান্ত যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে ক্রুদ্ধ হয়ে কাচের বোতল ভেঙে নিজের আঙুল নিজেই ফালাফালা করে ফেলেছিলেন কল্যাণ। তাঁর ডান হাতের বুড়ো আঙুলে ছ’টি সেলাই পড়েছিল। সেলাই কাটার পরেও ক্ষতস্থানে ব্যথা ছিল শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের। তার মধ্যে গত দু’দিন ধরে ঠান্ডা লেগে জ্বর জ্বর ভাবও রয়েছে কল্যাণের। ক্রুদ্ধ হয়ে নিজেই নিজের আঙুল কেটে ফেলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নে কি একটু বিব্রত বোধ করেছিলেন কল্যাণ? শ্রীরামপুরের সাংসদ জানিয়েছেন, একেবারেই বিব্রত হননি। বরং তিনি প্রধানমন্ত্রীকে বলেছেন, ‘‘একদম ঠিক আছি।’’ প্রধানমন্ত্রী যখন কল্যাণের সঙ্গে কথা বলছেন, তখন পাশে ছিলেন আরও কয়েক জন তৃণমূল সাংসদ। প্রধানমন্ত্রীকে কল্যাণের সঙ্গে এমন কুশল বিনিময় করতে দেখে তাঁরাও প্রাথমিক ভাবে চমকে গিয়েছিলেন।
কারও কিছু হলে মোদীর খবর নেওয়াটা নতুন নয়। কয়েক বছর আগে তৃণমূলের একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যের পাওনার দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিল। সেই দলে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তার কয়েক মাস আগেই অভিষেকের চোখে একটি অস্ত্রোপচার হয়েছিল। মোদী প্রথমেই অভিষেককে জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘‘আপনার চোখ কেমন আছে?’’ আবার গত বছর যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সাংসদেরা মোদীর কাছে গিয়েছিলেন, তখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর প্রথম প্রশ্ন ছিল, ‘‘দিদি, আপনার পা কেমন আছে?’’ গত বছর স্পেন এবং দুবাই সফর থেকে ফেরার পরে মমতার পায়ে অস্ত্রোপচার হয়েছিল। তার কয়েক মাস পরেই মোদীর কাছে বাংলার পাওনার দাবি জানাতে গিয়েছিলেন মমতা। এ বার কল্যাণের কেটে যাওয়া আঙুলের খবর নিলেন প্রধানমন্ত্রী।