Abhijit Ganguly Kalyan Banerjee

অভিজিতের সঙ্গে ‘ডুয়েলে’ রক্ত ঝরল কল্যাণের! কী নিয়ে লড়াই বিজেপি এবং তৃণমূল সাংসদের মধ্যে?

বৈঠকের শেষে দেখা যায় আহত কল্যাণকে ধরে বাইরে নিয়ে আসছেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম) সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের হাতে ছ’টি সেলাই পড়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২৪ ১৯:৩০
(বাঁ দিকে) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠক দেখল বাংলার বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এবং তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘ডুয়েল’। দু’জনের তর্কাতর্কি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে, উত্তেজিত পড়েন কল্যাণ। কাচের জলের বোতল ভেঙে তার হাতে ঢুকে গিয়েছে। রক্তারক্তি কাণ্ড ঘটে বৈঠকে। তার পরে কল্যাণের ডান হাতে ছ’টি সেলাই করতে হয়েছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, বৈঠকে অভিজিতের সঙ্গে তর্ক শুরু হয় কল্যাণের। দু’জনেই দু’জনের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে থাকেন। বাকিরা থামানোর চেষ্টা করলেও পারেননি। অভিযোগ, এর পর কমিটির চেয়ারম্যান কল্যাণকে কিছুটা কঠোর ভাবে আসনে বসতে বলেন। বিরোধী শিবিরের অন্য এক সাংসদের দাবি, চেয়ারম্যান কল্যাণের প্রতি যতটা কঠোর মনোভাব দেখিয়েছেন, অভিজিতের প্রতি ততটা দেখাননি। তাতেই আরও উত্তেজিত হয়ে পড়েন শ্রীরামপুরের চার বারের তৃণমূল সাংসদ। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানার জন্য তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর ফোন বন্ধ রয়েছে। মোবাইলে পাঠানো বার্তারও কোনও জবাব মেলেনি।

বৈঠকের শেষে দেখা যায় আহত কল্যাণকে ধরে বাইরে নিয়ে আসছেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম) সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদের পাশে দেখা গিয়েছে আম আদমি পার্টি (আপ)-এর রাজ্যসভা সাংসদ সঞ্জয় সিংহকেও। এর আগে যখন অভিজিৎ ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি তখন আইনজীবী কল্যাণের সঙ্গে আদালত কক্ষে একাধিক বার বিতণ্ডা হয়েছে। দু’জন দু’জনের উদ্দেশে কটাক্ষ ছুড়ে দিতেন। মঙ্গলবার সংসদের যৌথ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে পুরনো ‘বিতণ্ডা’ নতুন করে ফিরে এল।

বিরোধীদের প্রবল আপত্তি ও হট্টগোলের মধ্যে গত ৮ অগস্ট লোকসভায় ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। বিলটি ‘অসাংবিধানিক এবং মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপকারী’ বলে অভিযোগ তুলে বিরোধীরা একযোগে তা নিয়ে আপত্তি জানান। দীর্ঘ বিতর্কের শেষে ঐকমত্যের লক্ষ্যে বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি)-র কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্র।

কংগ্রেস, তৃণমূল, ডিএমকে, এসপি, আপ, মিম-সহ প্রায় সব ক’টি বিরোধী দলের বক্তব্য হল, ওই বিল সংবিধান-বিরোধী। ওই বিল এক দিকে যেমন মুসলিমদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কেড়ে নেবে, তেমনই যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোতেও আঘাত করবে। বিলে বলা রয়েছে, আগামী দিনে কোনও সম্পত্তি ওয়াকফ হিসাবে ঘোষণা করার অধিকার ওয়াকফ বোর্ডের হাতে থাকবে না। ওই ক্ষমতা তুলে দেওয়া হবে জেলাশাসকদের হাতে। বিরোধীদের অভিযোগ, নতুন আইনে যাবতীয় ক্ষমতা জেলাশাসকের হাতে চলে যাবে। এর ফলে জেলাশাসক ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যানের থেকেও শক্তিশালী হয়ে উঠবেন। যাবতীয় গুরুত্ব হারাবে ওয়াকফ বোর্ড। পুজোর পরেই এই সংক্রান্ত বৈঠক থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন কল্যাণেরা। মঙ্গলবার ফের বসেছিল যৌথ সংসদীয় কমিটি। সেই বৈঠকও সুষ্ঠু ভাবে হল না।

আরও পড়ুন
Advertisement