Sandeshkhali Incident

সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারার মেয়াদ বৃদ্ধি, শুক্রবার পর্যন্ত ন’টি জায়গায় থাকবে প্রশাসনিক বিধিনিষেধ

বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সন্দেশখালির পাঁচ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। সেই পাঁচটি জায়গার সঙ্গে আরও চার জায়গায়, অর্থাৎ মোট নয় জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি করা হল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৪২
image of sandeshkhali

সন্দেশখালিতে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের একাংশের। — ফাইল চিত্র।

সন্দেশখালির একাধিক জায়গায় ১৪৪ ধারা জারির মেয়াদ আরও এক দিন বৃদ্ধি করা হল প্রশাসনের তরফে। বৃহস্পতিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সন্দেশখালির পাঁচ জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। সেই পাঁচটি জায়গার সঙ্গে আরও চার জায়গায়, অর্থাৎ মোট নয় জায়গাতে ১৪৪ ধারা নতুন করে জারি করা হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত তা জারি থাকবে।

Advertisement

সন্দেশখালিতে প্রবেশ করার জন্য রয়েছে পাঁচটি ঘাট। ধামাখালি ঘাট, সন্দেশখালি ঘাট, ভোলাখালি ঘাট, খুলনা ঘাট এবং জেলেখালি ঘাট— ২০ ফেব্রুয়ারি, মঙ্গলবার সকালে সেই পাঁচটি ঘাটেই ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। ধামাখালিতে আটকানো হয় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীদের। ধামাখালিতে আটকে দেওয়া হয় সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য বৃন্দা কারাটকেও।

প্রসঙ্গত, তার আগের দিন, ১৯ ফেব্রুয়ারি সন্দেশখালিতে ১৪৪ ধারা জারির উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই স্থগিতাদেশ বহাল থাকবে, সোমবার নির্দেশ দেন বিচারপতি কৌশিক চন্দ। ওই তারিখ থেকে সাত দিন পর হওয়ার কথা পরবর্তী শুনানি।

গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সন্দেশখালিতে যত অপরাধের মামলা হয়েছে, সোমবার সেই তথ্যও চায় কলকাতা হাই কোর্ট। বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপারকে ওই তথ্য দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ ছিল, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আপাতত ওই এলাকায় মোতায়েন করার নির্দেশ দিচ্ছি না। কিন্তু নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে ফল ভুগতে হবে রাজ্যকে।’’ পাশাপাশি, আদালত এ-ও জানিয়েছিল, সন্দেশখালির নির্দিষ্ট এলাকায় যেতে পারবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। সেই নির্দেশের পর সন্দেশখালি থেকে সোমবার রাতে তুলে নেওয়া হয়েছিল ১৪৪ ধারা। যদিও পরের দিন, মঙ্গলবার সকালেই আবার পাঁচ জায়গায় জারি হয় ১৪৪ ধারা। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তা জারি থাকার কথা ছিল। সেই মেয়াদ আরও এক দিন বৃদ্ধি করা হল প্রশাসনের তরফে।

১৪৪ ধারাকে সামনে রেখে সন্দেশখালিতে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন শুভেন্দু। সিপিএমের একটি মামলার প্রেক্ষিতে সন্দেশখালি থেকে ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ খারিজের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। তার পর সন্দেশখালির পাঁচ জায়গা থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে প্রশাসন। শুভেন্দুর অভিযোগ, তার পরেও তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। এই অভিযোগ জানিয়ে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আবার হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। বিচারপতি চন্দ সেই মামলা দায়েরের অনুমতি দেন। তার শুনানিতেই গত সোমবার বিচারপতি অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, যে সব এলাকা থেকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে, সেখানে যেতে পারেন শুভেন্দু। পরের দিন প্রথমে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেও পরে সন্দেশখালির বেশ কিছু জায়গায় গিয়েছিলেন শুভেন্দু। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেছিলেন।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে আবার উত্তপ্ত হয় সন্দেশখালি। সামনের সারিতে ছিলেন মহিলারা। তৃণমূল নেতা শাহজাহান শেখ, শিবু হাজরাদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীদের একাংশ। মহিলাদের একাংশ অভিযোগ করেন, তাঁরা হেনস্থার শিকার হয়েছেন। আঙুল ছিল তৃণমূল নেতাদের একাংশের দিকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। সেই কারণ দেখিয়ে দু’দিন শুভেন্দুকে সন্দেশখালি যেতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে। তার পরেই মামলা দায়ের। পরে উচ্চ আদালতের নির্দেশ মেনে এলাকাভিত্তিক ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। বিরোধীরা অভিযোগ করে, এর পরেও তাঁদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার আদালতের দ্বারস্থ হন শুভেন্দু। তাতেই হাই কোর্ট গত সোমবার সেই ১৪৪ ধারা জারির উপর স্থগিতাদেশ দেয়। যদিও পরের দিন আবার পাঁচ জায়গায় জারি হয় ১৪৪ ধারা। শুক্রবার পর্যন্ত মোট ন’জায়গায় থাকছে বিধিনিষেধ। কেন এত দিন ১৪৪ ধারা, সেই প্রসঙ্গে রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার বলেন, ‘‘কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক রং দেওয়ার চেষ্টা করছিল। বিভিন্ন লোক আইন ভাঙার চেষ্টা করছিল। তাই বাধ্য হয়ে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement