(বাঁ দিকে) জখম ছাত্রী। (ডান দিকে) শিলিগুড়ির কিংডম পার্ক। —নিজস্ব চিত্র।
শিক্ষামূলক ভ্রমণে শিলিগুড়িতে এসে দুর্ঘটনার মুখে পড়ল বিহারের এক ১৭ বছরের কিশোরী। শিলিগুড়ির সেভেন কিংডম পার্কে জয় রাইডের সময় তাঁর মাথার চামড়া সমেত চুল উপড়ে গিয়েছে। গুরুতর অবস্থায় ছাত্রীটি মাটিগাড়ার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ নিয়ে পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেছে কিশোরীর পরিবার।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার বিহারের অরারিয়ায় একটি স্কুল থেকে ৫০ জন পড়ুয়াকে নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিলিগুড়ির কিংডম পার্কে আসে পড়ুয়াদের দলটি। নিয়ে আসা হয়। শিক্ষিকা নীতু সরণ তাঁর ১৭ বছরের মেয়েকেও নিয়ে এসেছিলেন সেখানে। মাটিগাড়ার দাগাপুর এলাকায় পার্কটিতে ওই শিক্ষিকার মেয়ে ‘গো কার্টিং’ করছিলেন। সেই সময়ই দুর্ঘটনা হয়। কিশোরীর চুল-সহ মাথার চামড়া উঠে যায়। অভিযোগ, দুর্ঘটনার পরে মেয়েটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থাও করেননি পার্ক কর্তৃপক্ষ। শিক্ষক শিক্ষিকারা নিজেদের উদ্যোগে মাটিগাড়ার একটি হাসপাতালে নিয়ে যান জখম মেয়েটিকে। তার পরেই পার্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন কিশোরীর মা থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের অভিযোগ, ‘গো কার্টিং’ করানোর ক্ষেত্রে তো পার্ক কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ছিলই। তা ছাড়া পার্কের পাশে প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থাটুকুও নেই। দুর্ঘটনার পরে একটা অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে দেওয়ারও উদ্যোগ নেননি পার্কের কেউ। এ নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হবেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
আহতের দাদা অভিজিৎ সরণ বলেন, ‘‘বাচ্চাদের নিয়ে শিক্ষামূলক ভ্রমণ ছিল। আমার বোনও তাতে অংশ নেয়। ‘গো কার্টিং’ করার সময় মাথার চুল পেঁচিয়ে গিয়েছিল ওর। চামড়া সমেত চুল উঠে আসে। কোনও প্রকারে চুল কেটে ওকে সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়। ন্যূনতম ব্যাবস্থাপনা ছিল না পার্কটিতে। বোনকে টোটো করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা আরারিয়া থেকে ফোনে যোগাযোগ করে মাটিগাড়ার হাসপাতালে পরে ভর্তি করিয়েছি। সোমবার রাতে পরিবারের লোকজন শিলিগুড়ি পৌঁছেছি। বোনের অস্ত্রোপচার করেছেন চিকিৎসকেরা। এখন পর্যবেক্ষণে আছে সে।’’ এই ঘটনায় ডিসিপি (পশ্চিম) বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, ‘‘পরিবারের পক্ষ থেকে ঘটনার কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি এখনও। তবে অভিযোগ দায়ের হলে অবশ্যই আমরা গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।’’ তবে পার্ক কর্তৃপক্ষের কোনও বক্তব্য মেলেনি। এক বছর আগেও এখানকার ওয়াটার পার্কে স্নান করতে এসে বিহারের এক যুবকের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময়ও পার্কের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।