মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
মালদহের তৃণমূল নেতা দুলাল সরকার খুনে ‘জড়িতদের’ খোঁজে ঝাড়খণ্ড ও বিহারে গেল রাজ্য পুলিশের তদন্তকারী দল। রাজ্যের একাধিক জেলাতেও দল পাঠানো হয়েছে। রবিবার সকালে খুনের ঘটনার প্রধান অভিযুক্ত কৃষ্ণ রজক ওরফে রোহন এবং রোহনের পরিচিত বাবলু যাদবকে ধরতে ছবি দিয়ে মোট চার লক্ষ টাকা পুরস্কারও ঘোষণা করেছে জেলা পুলিশ। তবে'প্রকৃত চক্রান্তকারীদের' ধরার দাবি তুলে দু-তিন দিন পরে এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথা জানিয়েছেন নিহত নেতার স্ত্রী চৈতালী ঘোষ সরকার।
জেলার রাজনীতিতে দুলাল-বিরোধী বলে পরিচিত নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি খুনের পরে প্রথম বার প্রকাশ্যে এসে বলেছেন, ‘‘পুলিশ তদন্তে বিষয়টি নিয়ে সত্য বেরিয়ে আসবে।’’ কান্নায় ভেঙে পড়ে তাঁর সংযোজন: ‘‘বাবলা আমার বাল্যবন্ধু। আমি কারও মৃত্যু কামনা করিনি। আমায় অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।’’ নরেন্দ্রনাথ এবং তার পরিবারের উপরে হামলার অভিযোগ ছিল বাবলার অনুগামীদের একাংশের বিরুদ্ধে। খুনের পরে সে বিবাদের ঘটনা ফের চর্চায় আসে।
গত বৃহস্পতিবার ইংরেজবাজারের মহানন্দাপল্লিতে আততায়ীদের গুলিতে খুন হন তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি দুলাল সরকার। তদন্তের তদারকিতে মালদহেই রয়েছেন রাজ্য পুলিশের আইজি (উত্তরবঙ্গ) রাজেশ যাদব। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত চলছে। পাঁচ জন গ্রেফতার হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। পুলিশের একাধিক দলকাজ করছে।’’
অভিযুক্তদের খোঁজ দিলে পরিচয় গোপন রেখে দু’লক্ষ টাকা করে পুরস্কারের ঘোষণা করা হয়েছে পুলিশের তরফে। পুলিশের দাবি, মূল অভিযুক্তদের এক জন ঝলঝলিয়া রেলওয়ে ব্যারাক কলোনির বাসিন্দা বছর তিরিশের রোহন এবং অন্য জন মহানন্দাপল্লির বাসিন্দা ৩১ বছরের বাবলু যাদব। দুলালের মহানন্দাপল্লির আবাসন থেকে এদের বাড়ি কয়েকশো মিটারের মধ্যে। স্থানীয় সূত্রের দাবি, বাবলুকে দুলালের কার্যালয়েও দেখা যেত এবং সে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতেও থাকত। পাশাপাশি, ভিন্ জেলার আরও এক অভিযুক্তের খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ। সে ‘শার্প শুটার’ বলে তদন্তকারীদের দাবি।
এলাকার একটি জমির দখল নিয়ে বিবাদের জেরে তৃণমূল নেতাকে খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে দাবি পুলিশ সূত্রের। যদিও দুলালের স্ত্রী চৈতালী বলেন, ‘‘চক্রের মাথাদের গ্রেফতার করতে হবে। এদের দেখিয়ে আসল চক্রীদের যেন আড়াল করে রাখা না হয়। আরও দু’-তিন দিন দেখব। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেদেখা করব।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, বাবলুর বাড়ি আদতে ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জে। বাবলূর বাবার রেলের চাকরির সূত্রে মহানন্দাপল্লিতে ১৫ বছর আগে বাড়ি তৈরি করে পরিবারটি। বাবলুর স্ত্রী সুচরিতা এ দিন বলেন, ‘‘এক বাড়িতে থেকেও স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। স্বামী বেকার। আমি কাজ করি।’’ তাঁর দাবি, "১ জানুয়ারি বাবলু বাড়িতে এসেছিল। তার পরে আর দেখিনি। রোহনকে আগে কয়েক বার বাবলুর সঙ্গে বাড়িতে দেখেছি।"