ত্রিবেণী তীর্থের কথা মোদীর মুখে। — ফাইল চিত্র।
হুগলির ত্রিবেণীতে সম্প্রতি হয়ে গেল তিন দিনের কুম্ভমেলা। আসল কুম্ভ হয় মকর সংক্রান্তিতে। নতুনের তিথি মাঘী সংক্রান্তি। গত বছরেই নতুন কুম্ভ শুরু হয়েছে। দেখাদেখি গঙ্গার ঠিক ও পারে নদিয়ার কল্যাণীতেও বসেছিল কুম্ভমেলা। এ বারেই প্রথম। সেখানেও তিন দিনের স্নান। সঙ্গে মেলা আর আখড়া। দু’পারেই সাধু-সন্ন্যাসীর ভিড় লেগেছিল। অনেকেই দাবি করেছিলেন, বহু বছর আগে বাংলার ত্রিবেণীতে মুক্তবেণীর সঙ্গমে কুম্ভমেলা হত। রবিরার সেই দাবিতেই সিলমোহর দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে স্বাধীনতার পরে পরেই কেন এই ঐতিহ্যকে ফিরিয়ে আনা হয়নি তা নিয়েও প্রশ্ন তুললেন।
ত্রিবেণী ও কল্যাণীতে কুম্ভমেলা নিয়ে এ বার বাড়তি উৎসাহ দেখা যায় রাজ্য বিজেপির মধ্যেও। কল্যাণীর ঘাটে গঙ্গায় ডুব দেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পুজো দিতে যান ত্রিবেণীতেও। এ বার সেই ত্রিবেণী নিয়েই ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে মনের কথা বললেন মোদী। রবিবার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের ত্রিবেণী বহু শতাব্দী ধরে একটি পবিত্র স্থান হিসেবে পরিচিত। বিভিন্ন মঙ্গলকাব্য, বৈষ্ণব সাহিত্য, শাক্ত সাহিত্য এবং অন্যান্য বাংলা সাহিত্যকর্মে এর উল্লেখ পাওয়া যায়। এই মাসে সেই ত্রিবেণীতে কুম্ভস্নানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই পুণ্যস্নানে আট লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিলেন।’’ এটি কেন এত তাৎপর্যপূর্ণ তা বলতে গিয়ে মোদীর বলেন, ‘‘৭০০ বছর পর আবার এই প্রথাকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়েছে।’’
A noteworthy effort in Hooghly, West Bengal caught my attention…
— Narendra Modi (@narendramodi) February 26, 2023
The Tribeni Kumbho Mahotsav has been revived after several centuries and is showcasing our cultural as well as spiritual heritage. #MannKiBaat pic.twitter.com/gVjA2s7RCy
প্রধানমন্ত্রী রবিবার আরও বলেন, ‘‘কয়েক হাজার বছরের এই প্রথা দুর্ভাগ্যবশত ৭০০ বছর আগে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই পুণ্যস্নানের প্রথা স্বাধীনতার পরই নতুন করে শুরু করা উচিত ছিল। তবে তা হয়নি।’’ উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে মোদী বলেন, ‘‘ত্রিবেণী কুম্ভ পরিচালনা সমিতির প্রয়াসে এই স্নানের প্রথা আবার চালু করার প্রক্রিয়া শুরু হয়। আমি এই আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত সকলকে অভিনন্দন জানাই। আপনারা কেবল একটি প্রথাকেই নতুন করে চালু করেননি। আপনারা ভারতীয় সংস্কৃতিকেও রক্ষা করেছেন।’’
প্রসঙ্গত, গত ১২ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি বাঁশবেড়িয়া পুরসভা এলাকার ত্রিবেণীতে কুম্ভস্নানের আয়োজন হয়েছিল। ১৩ ফেব্রুয়ারি ছিল কুম্ভস্নান। সঙ্গে বসে মেলা। জেলা প্রশাসনও মেলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ত্রিবেণীর শিবপুর মাঠে বিশাল যজ্ঞের আয়োজন করা হয়। মোদী তাঁর লোকসভা এলাকায় হওয়া মেলার কথা উল্লেখ করায় খুশি হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। ৭০৩ বছর পরে কুম্ভ হল বাংলায়। এর তো একটা ঐশ্বরিক ক্ষমতাও রয়েছে। মোদীজির মুখে প্রয়াগরাজ শুনেছি। আজ বাংলার ত্রিবেণী সঙ্গমের কথা বললেন। শুধু আমি বা হুগলির মানুষ নয়, গোটা বাংলার কাছেই এটা গর্বের বিষয়।’’