রেশন ডিলার হওয়ার জন্য ভুয়ো শংসাপত্র দিয়ে আবেদনের অভিযোগ তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
বিবাহবিচ্ছেদের ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে রেশন ডিলারের জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক পঞ্চায়েত সদস্য তথা ব্লক যুব তৃণমূল সভাপতির বিরুদ্ধে। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। আবেদনের কথা স্বীকার করে নিলেও যাঁর সঙ্গে সংসার করছেন, তাঁকে ‘ডিভোর্সি’ দেখানোর অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই তৃণমূল নেতা। বিজেপির অভিযোগ, এ ভাবেই জাল নথি তৈরি করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ‘করে খাচ্ছেন’ শাসকদলের নেতা-নেত্রীরা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার শান্তিপুরে হরিপুর পঞ্চায়েত এলাকায় ধনঞ্জয় মণি নামে এক ব্যক্তির রেশন দোকান ছিল। কিছু দিন আগে তিনি মারা গিয়েছেন। তাই সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, রেশন ডিলারশিপের জন্য নতুন করে আবেদনপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছে। সেখানে স্ত্রীকে ‘ডিভোর্সি’ দেখিয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে হরিপুর পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্য রূপম মান্নার বিরুদ্ধে। বস্তুত, রেশন ডিলারশিপ প্রদানে ১০০ নম্বরের একটি মূল্যায়ন হয়। সেখানে ২০ নম্বর থাকে যাতায়াতের সুবিধার ক্ষেত্রে, ১০ নম্বর অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থার জন্য। একই রকম ভাবে ১০ নম্বর আলাদা করে থাকে বিবাহবিচ্ছিন্নার ক্ষেত্রে। ওই সুবিধা পেতে তৃণমূল নেতা বিবাহবিচ্ছেদের ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে আবেদন করেছেন বলে অভিযোগ।
অভিযোগ শুনে তৃণমূল নেতা রূপম জানান, তিনি সরকারি নিয়ম মেনে আবেদন করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘নিয়ম মেনেই সব করেছি। আর ডিভোর্সের বিষয়টি সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক বিষয়। এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
অন্য দিকে, বিরোধীদের অভিযোগ, সরকারি সুবিধা নিতে নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিচ্ছেন শাসকদলের নেতারা। রানাঘাটের বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকারের কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল লুটেপুটে খাওয়ার রাজনীতি করছে। যাঁর সঙ্গে সংসার করছেন, সেই স্ত্রীকে ডিভোর্সি দেখাতেও কুণ্ঠা বোধ করেন না এঁরা।’’
যদিও দলের নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রসঙ্গে তৃণমূল জেলা সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগ আর বাস্তবের সঙ্গে কতটা মিল আছে তা খতিয়ে দেখতে হবে। যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হন, আইন অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।’’