teenage marriage

নাবালিকা বিবাহ রদেও সচেতন আনিশা, রাশিদা

আনিশা এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়ছে। সব ক্ষেত্রেই সফল। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের জন্য সরকারের তৈরি মীনামঞ্চের যে কমিটি তার কনভেনার।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলডাঙা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৯:১২
বাঁ দিকে, বেলডাঙার আনিশা সুলতানা, ডান দিকে ভগবানগোলার রাশিদা খাতুন।

বাঁ দিকে, বেলডাঙার আনিশা সুলতানা, ডান দিকে ভগবানগোলার রাশিদা খাতুন। নিজস্ব চিত্র।

মাদ্রাসা বোর্ডের পরীক্ষায় সফল বেলডাঙার দুই ছাত্রী। তাদের দু’জনেরই প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬। যেটা রাজ্যের নিরিখে দ্বিতীয় ও জেলার হিসাবে প্রথম। এই দুই ছাত্রী আনিশা সুলতানা ও রাশিদা খাতুন। তারা বেলডাঙা দেবকুণ্ড এসএআরএম গার্লস হাইমাদ্রাসার ছাত্রী।

আনিশা এই বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণি থেকে পড়ছে। সব ক্ষেত্রেই সফল। বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের জন্য সরকারের তৈরি মীনামঞ্চের যে কমিটি তার কনভেনার। নিজের হাতে তিনটে নাবালিকা বিবাহ বন্ধ করেছে। তার জন্য কয়েকটি পরিবারের কাছ থেকে জুটেছে গঞ্জনাও। কলকাতায় আয়োজিত সংখ্যালঘু পরিসরে মেয়েদের অধিকার শীর্ষক আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তব্য রেখে উপস্থিতদের মধ্যে আলাদা মর্যাদা লাভ করেছে। বিদ্যালয়ের শিশু সংসদে সে শিক্ষা মন্ত্রী। শুক্রবার সন্ধ্যার পর আনিশা কথা বলতে গিয়ে জানাল, “আমরা দুই বোন এক ভাই। বাবা মুদিখানার দোকান চালায়। কিন্তু আমার পড়াশুনোর বিষয়ে সব সমস্যা মিটিয়েছে বাবা। দিনে ৮-৯ ঘন্টা পড়েছি। বাংলার প্রস্তুতি কম ছিল। স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা দীপান্বিতা ম্যাম আমাকে নিজের কাছে টেনে পড়িয়েছে। ইংরেজির দিদিমণি আমাকে খুব যত্ম করে ক্লাসের পরে ডেকে আমাকে সব পড়াতেন। অন লাইনেও ক্লাস করিয়েছেন।”

Advertisement

অনিশা অঙ্ক, জীব বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান, ইসলাম পরিচয় এই চারটে বিষয়ে ১০০ নম্বর করে পেয়েছে। বেলডাঙা উত্তর পাড়ার বাসিন্দা আনিশা।

অন্যজন রাশিদা খাতুন। সে ভগবানগোলার বাসিন্দা। বেলডাঙার একটি বেসরকারি গার্লস হস্টেলে থেকে এই স্কুলে ভর্তি হয় নবম শ্রেণিতে। সেও মাদ্রাসার ভাল ছাত্রী। তার বাবা মহম্মদ তুজাম্মেল হক ভগবানগোলার চরলবনগোলা হাই মাদ্রাসার শিক্ষক। মহম্মদ তুজাম্মেল হক বলেন, ‘‘মেয়ে দিনে ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করত। আমরা মনে করেছিলাম মেয়ে ভাল ফল করবে। কিন্তু এতটা ভাল হবে তা বুঝতে পারিনি। রাশিদা অঙ্ক, জীব বিজ্ঞান, ভৌত বিজ্ঞান ইসলাম পরিচয় এই চারটি বিষয়ে ১০০ নম্বর পেয়েছে।

দেবকুণ্ড এসএআরএম গার্লস হাইমাদ্রাসার প্রধান শিক্ষিকা মুর্শিদা খাতুন বলেন, “দুই ছাত্রীর এই ফল, খুব ভাল লাগছে। তবে পরীক্ষা হয়নি। এই নম্বর প্রাপ্তি নিয়ে তাদের যেন কোন অমর্যাদা না হয়।” তিনি বলেন, মাদ্রাসার প্রথম দিন থেকে অনিশা তার মাদ্রাসার সঙ্গে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে এসেছে। রাশিদার জন্যও মাদ্রাসা গর্ব অনুভব করে।

আনিশা এ দিনও ভর্তির পরীক্ষার জন্য পড়াশোনা করেছে। ভবিষ্যতে সে চিকিৎসক হতে চায়।

আরও পড়ুন
Advertisement