প্রতীকী চিত্র।
কখনও বন্যা, কখনও ঝড়বৃষ্টি, কখনও বা খরার কবলে পড়ে বিঘার পর বিঘা ফসলের ক্ষতি হয়। কখনও কেন্দ্রীয় বা রাজ্য সরকার কৃষকের পাশে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়, কখনওবা কোনও সরকারই কৃষকের পাশে দাঁড়ায় না। যার জেরে ফসলের বিমা করা না থাকলে কৃষকদের হা হুতাশ করা ছাড়া উপায় থাকে না। তাঁরা যাতে ফসলের বিমা করেন সে বিষয়ে সচেতন করছে কৃষি দফতর।
সম্প্রতি খরিফ মরসুমে ভুট্টা ও ধানের জন্য ‘বাংলা শস্য বিমা’ করানোর জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। আগামী ৩১ অগস্টের মধ্যে কৃষকদের নিখরচায় ফসলের বিমা করানোর জন্য ব্লক কৃষি দফতরে আবেদন জানানোর কথা বলা হয়েছে।
মুর্শিদাবাদের উপকৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) তাপস কুমার কুণ্ডু বলেন, ‘‘শস্যের বিমা করানোর জন্য আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিচ্ছি। কৃষকরা যাতে সহজেই বিমার আবেদন করতে পারেন সে বিষয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে যেমন শিবির করা হবে, তেমনই কৃষকদের সচেতন করা হবে।’’
বরাবরই কৃষকদের মধ্যে থেকে অভিযোগ ওঠে বাংলা শস্য বিমার বিষয়ে তাঁদের কিছু জানানো হয় না। এবারে কী প্রচার শুরু হয়েছে? কৃষি দফতরের কর্তাদের আগে জেলাজুড়ে ১০-১২ হাজার কৃষক ফসলের বিমা করতেন। কৃষি দফতর ও জেলা প্রশাসন, ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় কৃষকদের সচেতন করা গিয়েছে। যার জেরে সেই সংখ্যা সাড়ে চার লক্ষে এসে দাঁড়িয়েছে। জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানান, গত রবি মরসুম সর্বকালীন রেকর্ড করেছে। ওই মরসুমে জেলার প্রায় ৬ লক্ষ কৃষকের মধ্যে সাড়ে চার লক্ষ কৃষক বাংলা শস্য বিমা করেছিলেন।
মুর্শিদাবাদ জেলায় খরিফ মরসুমে এক লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়। এই দুটি ফসল এবারে শস্য বিমার আওতায় এসেছে। কৃষকদের ভোটার পরিচয়পত্র, আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাসবই, ফসল রোপণের শংসাপত্র সহ ব্লকের সহ কৃষি আধিকারিকের কার্যালয় কিংবা বিমা কোম্পানির প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হচ্ছে। নিখরচায় কৃষকদের শস্য বিমা করে দেওয়া হবে।
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে গত বছর ঘূর্ণিঝড় ‘আমপানে’ মু্র্শিদাবাদের হাজার হাজার বিঘা ফসলের ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু সে সময় কেন্দ্র বা রাজ্য কোনও সরকারই কৃষকদের সাহায্য করেনি। সে সময় কৃষকদের ‘রক্ষা কবচ’ হিসেবে দাঁড়িয়েছিল ‘বাংলা শস্য বিমা’। সূত্রের খবর, সে সময়ে যাঁদের বাংসা শস্য বিমা করা ছিল, তাঁদের বিমা বাবদ ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে এবছরে। জেলার প্রায় ৬১ হাজার ৪৫৮ জন কৃষক ২৫ কোটি ১৯ লক্ষ টাকা বাংলা শস্য বিমা থেকে ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। বাংলা শস্য বিমার সেই সব সুফলের উদাহরণ তুলে ধরে কৃষকদের শস্য বিমা করার বিষয়ে সচেতন করা হবে বলে কৃষি দফতরের কর্তারা জানিয়েছেন।