কল্যণীর জেএনএম মেডিকেল কলেজ। নিজস্ব চিত্র।
কর্তৃপক্ষের দেওয়া শাস্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হল কল্যণীর জেএনএম মেডিকেল কলেজের সাজাপ্রাপ্ত পড়ুয়া ও জুনিয়র চিকিৎসকরা। সম্প্রতি কল্যাণীর কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের বেশ কিছু ছাত্র ও জুনিয়র চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ করে কলেজেরই পড়ুয়ারা। তদন্তে নেমে কলেজের অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি ৪০ জনকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে একাধিক শাস্তির সুপারিশ করে। সেইমত তাদের শাস্তিও দেওয়া হয়। সেই শাস্তি বাতিলের আবেদন জানিয়ে আদালতের মামলা করল সাজাপ্রাপ্তরা।
শুক্রবার মামলাটি আদালতে উঠলেও শুনানি হয়নি। মামলার পরবর্তী তারিখ ২৬ নভেম্বর বলে কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে। বেশ কিছু দিন ধরে সংশ্লিষ্ট মহলে ছড়িয়ে পড়ে, কলেজ কর্তৃপক্ষের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছে সাজাপ্রাপ্তরা। বৃহস্পতিবার কলেজ কর্তৃপক্ষ এই মামলার নোটিস পেয়েছে বলে জানা যায়।
সম্প্রতি অ্যান্টি র্যাগিং কমিটি কলেজ কাউন্সিলের কাছে তদন্ত রিপোর্ট ও শাস্তির সুপারিশ পেশ করে। সেখানে মূল বা গুরুতর চার অভিযুক্তকে শাস্তি হিসাবে সারাজীবনের জন্য হস্টেলে ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। এছাড়া মাঝারি ও হালকা অভিযুক্তদের যথাক্রমে ছয় ও তিন মাস করে হস্টেলে ঢুকতে না দেওয়ার শাস্তির সুপারিশ করেছে। সেই সঙ্গে ৪০ জনই যাতে কোনও দিন কোনও ক্ষেত্রে কলেজ ও ছাত্রদের প্রতিনিধিত্ব করতে না পারে তার সুপারিশ করে অনুমোদনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অফ হেলথ সায়েন্স’ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানোর সিন্ধান্ত হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও কর্তৃপক্ষই বিষয়টি নিয়েট চূড়ান্ত মতামত না দিলেও কেন সাজাপ্রাপ্তরা আদালতের দ্বারস্থ হল সেই প্রশ্ন উঠেছে।
এই বিষয়ে মামলাকারীরা প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে না চাইলেও ঘনিষ্ট মহলে তারা জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে যে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে তা অনৈতিক। এক প্রকপ্রকার জোর করে তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাদের কাছে যা পাল্টা ‘ডকুমেন্ট’ আছে তা আদালতে পেশ করলে চাপে পড়ে যাবে কলেজ কর্তৃপক্ষ। মামলাকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে আবাদনে স্বাক্ষর করেনি পড়ুয়া বিচিত্রকান্তি বালা ও আব্দুল হালিম দফাদার সহ তিন ইন্টার্ন সাগেন মুর্মু, জিদান ভর ও হাসানুরজ্জামান। মামলাকারীদের দাবি, আবেদনে স্বাক্ষর করার সময় এই পাঁচজন উপস্থিত ছিল না। তারা আগামী দিনে স্বাক্ষর করবে বলে জানিয়েছে।
মামলার বিষয়টি সামনে আসার পর শিক্ষক ও পড়ুয়া মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কলেজেরই এক চিকিৎসক অধ্যাপকের কথায়, “ওরা দেখলাম সরকারকেও পার্টি করেছে। তার মানে ওরা সরকারের উপর ভরসা রাখতে পারল না। জানি না সরকার বিষয়টি কেমন ভাবে দেখবে।” কল্যাণীর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মণিদীপ পাল বলেন, “মামলার নোটিস পেয়েছি। সেইমত পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”