Kolkata Doctor Rape-Murder Case

চিকিৎসকদের কর্মবিরতির জেরে রোগীমৃত্যু! ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ অন্তঃসত্ত্বাকেও, উত্তেজনা

মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসার জন্য টিকিট দেওয়া হচ্ছিল। প্রায় ২০০ টিকিট দেওয়ার পর আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় কাউন্টার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ১৭:০৮
patient

— প্রতীকী চিত্র।

পর্যাপ্ত চিকিৎসক না-থাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসার অভাবে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে রোগী মৃত্যুর অভিযোগ ঘিরে উত্তেজনার সৃষ্টি হল। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে কর্মবিরতি চলছে ওই হাসপাতালে। তার মধ্যে মঙ্গলবার সাপের কামড়ে জখম এর রোগীকে নিয়ে আসা হয়েছিল। বেশ কিছু ক্ষণের চেষ্টায় ভর্তিও করানো হয় ওই রোগীকে। কিন্তু ভর্তির তিন ঘণ্টার মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি পরিবারের। অভিযোগ, দু’টি ইনঞ্জেকশন দিয়ে বিছানায় হাত-পা বেঁধে ফেলে রাখা হয় রোগীকে। শরীর নীল হতে শুরু করেছিল রোগীর। সে কথা নার্সদের বলায় ধমক খেতে হয় পরিজনদের। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিদ্যাসাগর সরকার নামে ৩২ বছরের ওই রোগীকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি, এক অন্তঃসত্ত্বাকে হাসপাতাল থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

মৃত যুবকের বাড়ি বহরমপুর থানার চরমহুলায়। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার ভোরে ঘুমন্ত ওই যুবককে সাপে কামড়ায়। আধ ঘণ্টার মধ্যে প্রথমে তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে আনা হয় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। মঙ্গলবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের স্ত্রী সুভদ্রা সরকার বলেন, ‘‘হাসপাতালে ভর্তি করানোর পরেও দীর্ঘ ক্ষণ ফেলে রাখা হয়েছিল রোগীকে। তার পরে একটি ইঞ্জেকশন দেন চিকিৎসক। তার পর থেকেই শরীরটা নীল হতে থাকে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘সাপে কাটা বহু রোগী সঠিক চিকিৎসা পেয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে এসেছেন। চিকিৎসা হলে আমার স্বামীকেও বাঁচানো যেত।’’

বহরমপুর গোড়াবাজারের সংলগ্ন শেখপাড়া থেকে এক অন্তঃসত্ত্বাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। কিন্তু, চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলছে। তাই চিকিৎসকদের তরফেও নাকি জানিয়ে দেওয়া হয় যে, রোগীকে আপাতত জরুরি বিভাগে ভর্তি করানো যেতে পারে। শুধুমাত্র সেখানকার পরিষেবাই সচল রয়েছে। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অন্তঃসত্ত্বার পরিবারের সদস্যেরা। ওই মহিলার স্বামী বলেন, “কোথায় কী হয়েছে, তার জন্য তো আমরা দায়ী নই! সরকারি হাসপাতালে আমরা পরিষেবা পাওয়ার জন্য আসি। কিন্তু, হাসপাতালে ভর্তি নিল না।”

বস্তুত, মঙ্গলবার দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়ায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে। আউটডোরে রোগীদের চিকিৎসার জন্য টিকিট দেওয়া হচ্ছিল। প্রায় ২০০ টিকিট দেওয়ার পর আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় কাউন্টার। রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের অভিযোগ, সকাল ৯টা নাগাদ কয়েক জন জুনিয়র চিকিৎসক এসে টিকিট কাউন্টার বন্ধ করে দিতে বলেন। এ নিয়ে সাময়িক ভাবে উত্তপ্ত হয় হাসপাতালের পরিবেশ।

ওই দুই ঘটনা প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অমিত দাঁ বলেন, ‘‘কোনও রোগী অনেকটা সময় নষ্ট করার পর মেডিক্যাল কলেজে এসে পৌঁছলে চিকিৎসার সুযোগ খুব বেশি থাকে না। আর রোগীমৃত্যুর পিছনে চিকিৎসক গাফিলতির কোনও অভিযোগ এখনও পাইনি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement