সম্ভাবনা মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রেও
Lok Sabha Election 2024

বহরমপুরে কি মাফুজা

বিজেপির এক প্রভাবশালী নেতার ইঙ্গিত, বহরমপুর যে ৭টি বিধানসভাকে নিয়ে গঠিত সেখানে দুই পুরসভা ও ৪টি বিধানসভায় ভাল ভোট রয়েছে বিজেপির।

Advertisement
বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫১
মাফুজা খাতুন।

মাফুজা খাতুন। chattopadhyayarka2022@gmail.com

লোকসভা ভোটের জল্পনায় ফের বিজেপি প্রার্থী হিসেবে উঠে এল মাফুজা খাতুনের নাম। তবে জঙ্গিপুরে নয়,বহরমপুরে প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা মাফুজার।

Advertisement

এর আগে ২০১৯ সালে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রে দাঁড়িয়ে ৩ লক্ষ ১৭ হাজার ৫৬টি ভোট পেয়ে কংগ্রেস প্রার্থী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎকে তৃতীয় স্থানে নামিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসেন মাফুজা। পরে ২০২১ সালে সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্রেও ২৪.০৮ শতাংশ ভোট পেয়ে কংগ্রেসকে তৃতীয় স্থানে নামিয়ে দিয়ে নজর কেড়েছিলেন মাফুজা। সেই মাফুজাকেই এ বার লোকসভায় প্রার্থী করার আভাস মিলেছে বহরমপুরে পরপর ৫ বারের জয়ী কংগ্রেসের লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে।

তবে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের কথাও উঠছে। সেই কেন্দ্রের তৃণমূল সাংসদ আবু তাহের খান এখন অসুস্থ। তিনি না দাঁড়ালে ওই কেন্দ্রে তৃণমূলকে নতুন কাউকে দাঁড় করাতে হবে। কিন্তু যিনিই দাঁড়ান, আবু তাহেরের মতো তাঁর প্রভাব এই কেন্দ্রে থাকবে না, সে ক্ষেত্রে মাফুজা দাঁড়ালে বিজেপির পক্ষে লক্ষ্যভেদ করা সহজ হবে।

তবে বিজেপির এক প্রভাবশালী নেতার ইঙ্গিত, বহরমপুর যে ৭টি বিধানসভাকে নিয়ে গঠিত সেখানে দুই পুরসভা ও ৪টি বিধানসভায় ভাল ভোট রয়েছে বিজেপির। এখনও পর্যন্ত যা খবর, সর্বভারতীয় স্তরে বিরোধী জোট হলেও এ রাজ্যে তা হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে অধীর চৌধুরীর সঙ্গে ভাল লড়াই হবে তৃণমূলের। ভোট ভাগ হবে। সেই লক্ষ্যে বিজেপির ভাল ফলের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মাফুজা প্রার্থী হলে বহু সংখ্যালঘু ভোটও আসবে তাঁর পক্ষে। আর এই অঙ্কেই কংগ্রেসের অনেকেই কিছুটা চিন্তায় রয়েছেন। তবে তৃণমূল অধীরের বিরুদ্ধে প্রার্থী না দিলে লড়াইয়ে মাফুজার জয়ের সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। সে ক্ষেত্রে মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে মাফুজাকে দাঁড় করানোর কথাও ভেবে রেখেছে পদ্ম-শিবির।

দক্ষিণ দিনাজপুরের ফুলবাড়ির বাসিন্দা মাফুজা কলেজে এসএফআই রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। ১৯৮৭ সালে সরাসরি সিপিএমে যুক্ত হন। সিপিএমের কুমারগঞ্জের বিধায়ক ছিলেন ২০০১ ও ২০০৬ সালে। ২০১১ ও ২০১৬ সালে পরপর দু’বার হেরে যান তিনি তৃণমূলের কাছে। ২০১৭ সালের মে মাসে যোগ দেন তৃণমূলে। রাজ্য বিজেপির সংখ্যালঘু শাখার সভাপতি হন। হন রাজ্য বিজেপির সহ সভাপতি। বামপন্থী ঘরানায় লালিত পালিত মাফুজা ভাল বক্তা। মানুষকে কাছে টানার ক্ষমতা রয়েছে। আর তাতেই নড়বড়ে সংগঠন নিয়েও জঙ্গিপুরে ৩.১৭ লক্ষ ভোট পেয়ে চমকে দেন জেলার রাজনীতিক মহলকে। এরপর সাগরদিঘিতেও বিধানসভা নির্বাচনে কিছুটা হলেও সাড়া ফেলেন তিনি ৪৪৯৮৩টি ভোট পেয়ে।
বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সুজিত দাস বলছেন,“কেন্দ্রীয় কমিটির নজরে আছেন তিনি। তাই লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে তার নাম মুর্শিদাবাদের কোনও কেন্দ্রে বিবেচিত হওয়ার সম্ভাবনা ১০০ শতাংশ। তবে সবটাই হবে দিল্লিতে। সাধ্বী নিরঞ্জন জ্যোতি জেলার তিনটি কেন্দ্রের দায়িত্বে রয়েছেন।” বিজেপির দক্ষিণ মুর্শিদাবাদের সভাপতি শাখারভ সরকার বলছেন, ‘‘বহরমপুর, বড়ঞা, কান্দি,বেলডাঙা ও দুই পুরসভায় বিজেপি লোকসভায় ভাল লিড নিয়ে বেরোবে।’’
কংগ্রেসের জেলা সহ সভাপতি ও প্রাক্তন সভাধিপতি শিলাদিত্য হালদার বলছেন, ‘‘তৃণমূল ও কংগ্রেসের মধ্যে লড়াইয়ে মাফুজা বিজেপিকে বাড়তি সুযোগ এনে দেবে বহরমপুরে, এটা ঠিক নয়।”

তবে মাফুজার কথায়, ‘‘আমাকে দল যা নির্দেশ দেবে তাই করব। তবে যেই দাঁড়াক বিজেপি বহরমপুরে লড়াইয়ে এ বার ভাল জায়গায় রয়েছে, এটা বলতে পারি।”

আরও পড়ুন
Advertisement