ফাইল চিত্র।
সীমান্তের ভাঙনগ্রস্ত এলাকার মানুষের দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল তাদের এলাকা দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতের একটি আন্তর্জাতিক পথ তৈরি হোক। বিষয়টি নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের কাছে লিখিতভাবে আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু সেই আবেদনে এতদিন কর্ণপাত করেনি কেউ। মাসখানেক আগে জলঙ্গির বাসিন্দাদের সেই আবেদন প্রধানমন্ত্রীর দফতরে পৌঁছে দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী। জলঙ্গির ওই এলাকা দিয়ে একটি স্থল বন্দর তৈরির আবেদন রেখেছিলেন তিনি। এবার দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে উত্তর দেয়া হল অধীর চৌধুরীর সেই চিঠির। কাকমারি সীমান্ত দিয়ে আন্তর্জাতিক বন্দরের বিষয়টি নিয়ে বিবেচনার কোথা জানানো হয়েছে সেই চিঠিতে।
স্বাভাবিক ভাবেই এই চিঠির খবর পৌঁছনোর পর মুর্শিদাবাদের সীমান্ত এলাকার মানুষের মনে খুশির হাওয়া। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, আমাদের বিষয়টি যদি ভারত সরকারের তরফে বিবেচনা করা হয় তাহলে এই এলাকার হাজার হাজার মানুষ উপকৃত হবেন। এলাকার বাসিন্দা হাদিউল ইসলাম বলছেন, ‘‘জলঙ্গির সীমান্তের মানুষ পদ্মার ভাঙনে সর্বস্বান্ত, ফলে এলাকার হাজার হাজার মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। এই দিক দিয়ে আন্তর্জাতিক বন্দর তৈরি হলে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে বলে আমরা আশা করছি। সরকারের উচিত গোটা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা।’’
অধীর চৌধুরী তাঁর চিঠিতে এই এলাকার হতদরিদ্র মানুষের অসহায়তার কথা উল্লেখ করেছেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে গোটা বিষয়টি তারাও তদন্ত করে দেখেছে এবং সাধারণ মানুষের অসহায়তার কথা তাদের জানা।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে চিঠি আসার ফলে আশার আলো দেখছেন জলঙ্গি বর্ডার ডেভলপমেন্ট কমিটি। কমিটির সম্পাদক জুলফিকার আলি বলছেন, ‘‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই চিঠি আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে, ভারত সরকারের কাছে আবেদন এলাকার ভাঙন গ্রস্ত মানুষের অসহায়তার পাশাপাশি গোটা মুর্শিদাবাদ জেলার মানুষের বাংলাদেশের যাতায়াতের সুবিধার কথা ভেবে কাকমারিতে বন্দর তৈরি করা হোক। এর ফলে যেমন মুর্শিদাবাদের মানুষ উপকৃত হবে, তেমন ভাবে বাংলাদেশের বড় একটা অংশের মানুষও উপকৃত হবে।"
বর্তমানে মুর্শিদাবাদ থেকে কাউকে বাংলাদেশ যেতে গেলে গেদে, পেট্রাপোল অথবা মালদা হয়ে যাতায়াত করতে হয়। ঠিক উল্টোদিকে বাংলাদেশের রাজশাহী শহরটা মাইল কয়েক দূরে হলেও সেখানকার মানুষকে মুর্শিদাবাদে আসতে গেলে কয়েকশো কিমি পথ মাড়িয়ে আসতে হয়। ফলে মুর্শিদাবাদের এই প্রান্ত দিয়ে বন্দর তৈরি হলে লাখো মানুষ উপকৃত হবেন দু'দেশের। জলঙ্গির বিধায়ক তৃণমূলের আব্দুর রাজ্জাক মন্ডল বলছেন, "এটা জলঙ্গির জন্য ভীষণ খুশির খবর, যদি ভারত সরকারের তরফে এই এলাকা দিয়ে বন্দর তৈরি করা হয় তাহলে যেমন দু’দেশের মানুষ ভীষণ ভাবে উপকৃত হবেন, তেমনি ভাবে হাজারও মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।’’