প্রতীকী চিত্র।
ফের তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এল, অস্বস্তিতে দলের নেতৃত্বরা। শুক্রবার সন্ধ্যায় সালার থানার তালিবপুর অঞ্চলের লেদুরি পাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানাযায় পঞ্চায়েতের সদস্যের ডাকে দলীয় বৈঠকে যুব তৃণমূলের কর্মীরা গিয়ে মারধর করে বৈঠক বন্ধ করার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে উঠে ওই এলাকা। ঘটনায় উভয় পঞ্চায়েত সদস্য-সহ পাঁচজন জখম হয়েছে, এবং পুলিশ সাত জনকে গ্রেফতার করেছে। জেলার পুলিশ সুপার কে শবরী রাজকুমার বলেন, “রাজনৈতিক দলের নিজেদের মধ্যে বৈঠক করাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে মারপিট হয়েছে। বেশ কয়েকজন জখম হয়েছে। পুলিশও সাত জনকে গ্রেফতার করেছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায় ওই দিন সন্ধ্যায় তালিবপুর অঞ্চলের লেদুরি পাড়া এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের জামিলা বিবি এলাকায় সংগঠন মজবুত করতে ও উন্নয়ন নিয়ে স্থানীয় কয়েকজন পঞ্চায়েত সদস্য ও দলীয় নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন। অভিযোগ, খবর পেয়ে ভরতপুরের তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরের অনুগামী ভরতপুর যুব তৃণমূলের সভাপতি আনারুল ইসলামের নির্দেশে ওই অঞ্চলের যুব তৃণমূলের সভাপতি হাসু শেখের নেতৃত্বে একদল যুব তৃণমূলের কর্মীরা ওই বৈঠক বন্ধ করতে যায়। এবং সেই সময় তারা জানিয়ে দেয়, “এখানে তৃণমূল বলতে শুধু যুব তৃণমূল। বৈঠক, মিছিল যা হবে সবটাই যুব তৃণমূল করবে।” তারপর লাঠি, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্য ও দলের মূল সংগঠনের নেতৃত্বদের বেধরক মারধর করে বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ফকির শেখ নামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য-সহ পাঁচ জন জখম হয়। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে ফকির বলেন, “এলাকার তৃণমূলের বিধায়ক হুমায়ুন সাহেবের মদতে যুব তৃণমূলের নেতা ও কর্মীরা আমাদের উপর আক্রমণ করেছে।” যদিও আনারুল ইসলাম বলেন, “কোভিড বিধি না মেনে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে কোন অনুমতি ছাড়াই ওই বৈঠক করছিল। সেটা আমাদের কর্মীরা বাধা দিয়েছিল। সেখানে আমাদের কর্মীদের মারধর করা থেকে আমাদের দলীয় কার্যালয় ভাঙচুর করেছে। উল্টে আমাদের কর্মীদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ।” শনিবার ওই ঘটনার পর যুব তৃণমূলের পক্ষ থেকে সালার থানায় বিক্ষোভ দেখায়।
যাঁর ডাকে ওই বৈঠক হচ্ছিল সেই পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলে জামিলা বিবি বলেন, “হুমায়ুন কবীর বিধায়ক হওয়ার পর তাঁর নির্দেশেই আমার ডাকা বৈঠকে মারধর করেছে আমাদের যুব সংগঠনের নেতা ও কর্মীরা।” যদিও বিধায়ক হুমায়ুন কবীর বলেন, “যাঁরা ভোটের সময় দল বিরোধী কাজ করবে তাঁরা আবার তৃণমূলের কে? ওদের বৈঠক করা মেনে নেওয়া হবে না। দলের জেলা সভাপতি আবু তাদের খানের মদতেই দল বিরোধীরা এখনও দলেই আছে। এটা আমি মেনে নেব না। আর বৈঠকে বাধা দেওয়া হয়নি, যুবদের কার্যালয় ভাঙচুর করার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে।”
আবু তাহের খান বলেন, “হুমায়ুন কী বলছে তার সব কথার উত্তর আমাকে দিতে হবে এমনটা নয়। ও (হুমায়ুন) তো আমাদের নেত্রীর নামে কথা বলে। তবে যেটাই হয়েছে তাতে দলের সংগঠনের পক্ষে ভাল নয়।”