পুজো বা ইদ, এমনকি ১৫ অগস্ট বা ২৬ জানুয়ারিতেও ভিড় উপচে পড়ে পদ্মার শাখা নদীর পাড়ে। জলঙ্গির একফালি ওই পদ্মাপাড় মহকুমার ফুসফুস। যে কোনও উৎসব বা যাতায়াতের পথে ফুরসত পেলেই ফুরফুরে হাওয়ায় নিঃশ্বাস নেওয়ার একমাত্র জায়গা এটি। ফলে উৎসবের দিনগুলিতে লাগামছাড়া ভিড় হয় ওই চত্বরে। এবছর করোনা বিধি থাকলেও সেই ভিড়ের ছবি বদলায়নি। এখানেই শেষ নয়, ঝুঁকি নিয়ে ভরা পদ্মায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লাইফ জ্যাকেট ছাড়া চলল নৌকায় ঘোরাফেরা। যদিও প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, ওই চত্বর সীমান্তরক্ষীদের প্রহরায় থাকে ২৪ ঘন্টা। সেখানে নৌকোয় চাপতে গেলে অনুমতি নিতে হয় তাদের। ফলে এমনটা হওয়ার কথা নয়। তার পরেও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা বলছেন আগামীতে বিষয়টিতে নজর দেবেন তারা।
করোনার প্রকোপ থাকায় ইদুলফেতেরের সময় খুব একটা ভিড় লক্ষ্য করা যায়নি জলঙ্গির পদ্মাপাড়ের বাঁকে। কিন্তু এ বারের ইদের সময় সেই ছবিটা আর দেখা যায়নি। বুধবার থেকেই ওই চত্বরে ভিড় ছিল লাগামছাড়া।
মেলার চেহারা নিয়েছিল পদ্মার শাখা নদীর পাড়ের একফালি জায়গা। ডোমকলের বাসিন্দা সামিউল ইসলাম বলেছেন, ‘‘প্রায় বছর দেড়েক হতে চলল ঘর বন্দি হয়ে আছি। এখন করোনার প্রকোপ কিছুটা কম, ফলে ঈদের দিন পরিবারের সকলের চাহিদা মেনেই পদ্মা পাড়ে পৌঁছে গিয়েছিলাম। তবে এতটা ভিড় হবে ভাবতে পারিনি, এমন পরিস্থিতি হবে বুঝতে পারলে এড়িয়ে যেতাম ওই এলাকা।’’
একই বক্তব্য জলঙ্গির সাইদুল ইসলামের। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেমেয়েরা বায়না ধরেছিল ঈদের পরের দিন একটু ঘুরতে যাব, আর আমাদের এলাকায় ঘুরতে যাওয়ার জায়গা বলতে জলঙ্গি বাজার লাগোয়া পদ্মাপারের ওই এক ফালি বাঁক। ফলে বেলা গড়াতেই হাজির হয়েছিলাম সেখানে। কিন্তু ভিড় দেখে বেশিক্ষণ আর দাঁড়ানো হয়নি সেখানে।’’
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে করোনা বিধি থাকলেও কিভাবে এত ভিড় জমল সেখানে?
প্রশাসনের কর্তারা বলছেন, গত ইদে লোকজনের আনাগোনা তেমনভাবে ছিল না, ফলে প্রশাসনের কর্তারা ভেবেছিলেন মানুষ সচেতন হয়েছে। তার জন্যই একটু লাগাম ছাড়া ভাবছিল প্রশাসনের। কিন্তু এবার হঠাৎ করেই সকলে একসঙ্গে চলে এসেছেন সেখানে। আগাম সতর্কতা না থাকার ফলেই এমন ঘটনা ঘটেছে।
জলঙ্গির বিডিও শোভন দাস বলছেন, ‘‘এমনটা হওয়ার কথা নয়। ওই চত্বরে বিএসএফের ২৪ ঘণ্টা নজরদারি থাকে। তাছাড়া নৌকায় উঠতে গেলেও বিএসএফের কাছে সচিত্র পরিচয় পত্র জমা দিয়েই উঠতে হয় বলে জানি। ফলে অতিরিক্ত যাত্রীর ভিড় হওয়ার কথা নয়। তবুও যদি এমনটা হয়ে থাকে তাহলে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"