টিকা পেতে সই লাগবে কৃষ্ণনগরের পুরপ্রশাসক অসীম সাহার। তার জন্য হুড়োহুড়ি। শিকেয় উঠল দূরত্ব বিধি। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরে। নিজস্ব চিত্র।
টিকা না-পাওয়ায় চলল বিক্ষোভ। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগরের শক্তিনগর এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ওই ঘটনা ঘটে। বিক্ষোভকারীরা ছিলেন ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীরাই। তাঁরা পুরসভায় এসে পুর-প্রশাসকের ঘরের সামনেও বিক্ষোভ দেখান।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আগে থেকে কিছু না জানিয়ে এ দিন সাড়ে ১১টা নাগাদ বলা হয় যে, ১৮-৪৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে না। শুধুমাত্র ৪৫ বছর ও তার ঊর্ধ্বদের টিকা দেওয়া হবে। এই ঘোষণা হতে বিক্ষোভ শুরু হয়। সেখান থেকে বিক্ষোভকারীরা চলে আসেন কৃষ্ণনগর পুরসভায়। সেখানে বেশ কিছু সময় টিকার দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। বিক্ষোভকারী রিঙ্কু দাস, রীতা দাসেরা বলছেন, “এর আগে আমরা তিন দিন টিকা না-পেয়ে ফিরে গিয়েছি। এ দিনও আমরা রাত ৩টে থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি টিকা নেওয়ার জন্য। কিন্তু আগে থেকে কিছু না-জানিয়ে বেলা ১১টার সময় বলছে যে, ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের টিকা দেওয়া হবে না।” তাঁদের অভিযোগ, “আমাদের কেন দিনের পর দিন এ ভাবে টিকার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে? অনেকেই তো দেখছি দিব্যি টিকা পেয়ে যাচ্ছেন।”
দিন কয়েক আগে কৃষ্ণনগরের রাজা রোড এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একই ভাবে টিকা না-পেয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বহু মানুষ। সে বার অভিযোগ ছিল, কৃষ্ণনগর পুরসভার প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা পুরপ্রশাসক অসীম সাহার সই করা আধার কার্ডের ফটোকপি ছাড়া টিকা দেওয়া হচ্ছিল না। সেই ঘটনার পর ওই কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ দিন অবশ্য সেই অভিযোগ না-থাকলেও দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষকে হয়রান করার অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ দিন বিক্ষোভের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিতি ছিলেন পুরসভার হেলথ অফিসার শ্যামল ঘোষ। এই বিষয়ে তিন নিজে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর সংযোজন, “যা বলার পুরপ্রশাসক অসীম সাহা বলবেন।”
অসীম সাহাকে এই বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “প্রতিদিন ওই কেন্দ্রের জন্য আড়াইশো টিকা দেওয়া হয়। ফলে কোনও সমস্যা হয় না। আজ দেড়শো টিকা দেওয়া হয়েছে।” তিনি বলেন, “আমাদের তো আগে দ্বিতীয় ডোজ় দিতে হবে। যাঁদের কোমর্বিডিটি আছে তাঁদের টিকা দিতে হবে। সেই কারণে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সীদের এ দিন টিকা দেওয়া হবে না।” তিনি বলেন, “পর্যাপ্ত টিকা না-আসা পর্যন্ত আমরা আর এ ভাবে টিকা না-দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”