—প্রতীকী চিত্র।
শ্মশানের জন্য জমি কেনার সিদ্ধান্ত সবার পঞ্চায়েত সদস্যদের সম্মতিতে হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন পঞ্চায়েতের প্রধান।
অথচ বৈঠকের পরে সিদ্ধান্ত নথিভুক্তকরণের খাতায় উল্লেখ রয়েছে, ওই দিনের বৈঠকে প্রধান ছাড়া হাজির ছিলেন শিল্প পরিকাঠামো সঞ্চালক, পঞ্চায়েতের দুই সিপিএম সদস্য ও এক জন কংগ্রেস সদস্য। ফলে তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান দলেরই অন্যান্য সদস্যদের অন্ধকারে রেখেই ৩৭ লক্ষ টাকায় জমি কেনার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, তা কার্যত স্পষ্ট। বৃহস্পতিবার সামনে আসে ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রতিলিপি। প্রত্যাশিত ভাবেই বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে।
রানাঘাট-১ ব্লকের অধীনে রয়েছে পায়রাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েত। গত ১৫ জানুয়ারি পঞ্চায়েতের তরফে শ্মশান তৈরির জন্য ৭০.৫ শতক জমি কেনা হয়। তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের একাংশ সদস্যদের অভিযোগ ৭ লক্ষ টাকার জমি পাঁচ গুণেরও বেশি দাম দিয়ে কিনেছে পঞ্চায়েত। জমি কিনতে খরচ করা হয়েছে পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল। শুধু তাই নয়, রানাঘাট-১ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তথা পায়রাডাঙা পঞ্চায়েতের শিল্প পরিকাঠামোর সঞ্চালক কংগ্রেসের বিজয়েন্দু বিশ্বাসের কাছ থেকে ওই জমি কিনেছে পঞ্চায়েত।
তৃণমূল পঞ্চায়েতের এহেন অনিয়মের অভিযোগ সামনে এনে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে আগেই লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্যরা। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই ওই জমি ক্রয়, বিক্রয়ের বিষয়ে শুরু হয়েছে তদন্ত। এমনকি পঞ্চায়েতের নির্বাহী সহায়ক রজত ঘোষকে ইতিমধ্যেই শো-কজ় করা হয়েছে। গত বছর ৪ অক্টোবর পঞ্চায়েতের সভাগৃহে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে জমি কেনার বিষয়ে সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতের প্রধান ফাল্গুনী বিশ্বাস বলেন, ‘‘জমি কেনার জন্য একটি কমিটি গঠন হয়, ওই কমিটির সদস্যদের নিয়েই বৈঠকে জমি কেনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয়। কোনও নথিপত্রে গরমিল নেই। ওই জমির বর্তমান বাজার মূল্য ৩৭ লক্ষ টাকা।’’
যদিও গত মঙ্গলবার প্রধানের দাবি ছিল, ‘‘পঞ্চায়েতের সকল সদস্যের সম্মতিতেই উন্নয়নের জন্য জমি কেনা হয়েছে।’’ জমি রেজিস্ট্রি হওয়ার আগেই কেন ৩৭ লক্ষ টাকা বিজয়েন্দুকে দেওয়া হল, সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্য দিতে পারেননি প্রধান।
আর বিজয়েন্দুর দাবি, ‘‘জমি আমারই ছিল। নথিপত্রে কিছু ভুল থাকাতে, নতুন করে আমি তিন লক্ষ টাকায় নিজের জমি রেজিস্ট্রি করিয়েছিলাম।’’
রানাঘাট-১ বিডিও জয়দেব মণ্ডল বলেন, ‘‘পুরো বিষয়টি তদন্ত চলছে। অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি দেখা হচ্ছে যেখানে যেমন গলদ সামনে আসবে সেই মতো আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’’