BJP MLA

মুর্শিদাবাদ থেকেই আলাদা রাজ্যের দাবি ওঠে! সুকান্ত, নিশিকান্তের আগেই চিঠি পাঠান বিজেপি বিধায়ক

জনবিন্যাস নিয়ে সংসদে একটি অভিযোগ করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। ওই পাঁচটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি করে জানান, অনুপ্রবেশের ফলে ওই পাঁচ জেলায় জনবিন্যাস বদলে গিয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪ ১৬:১০
Sukanta Majumdar, Nishikant Dubey and Gaurishankar Ghosh

(বাঁ দিক থেকে) সুকান্ত মজুমদার, নিশিকান্ত দুবে এবং গৌরীশঙ্কর ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

বাংলা ও বিহারের পাঁচ জেলাকে নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি করছেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শোরগোল শুরু হয়েছে। এই আবহে মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ জানালেন, আগেই তিনি এই দাবি জানিয়েছেন। তিনি জানান, ২০২২ সালে বাংলা, ঝাড়খণ্ড ও বিহারের পাঁচ রাজ্যকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণার দাবি জানিয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্যপালকে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তিনি। বিজেপি বিধায়ক প্রকাশ্যে এই মন্তব্য করার পর কটাক্ষ শানিয়েছে রাজ্যের শাসকদল।

Advertisement

বছর দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে ছিল বাংলা ভাগের দাবি। গৌরীশঙ্কর বলেন, ‘‘২০২২ সালে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশের বিষয়টি তুলে ধরেছিলাম। দেশের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখতে মুর্শিদাবাদ, মালদহ এবং ঝাড়খণ্ডের কয়েকটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি তুলেছিলাম। দল তাতে আস্থা রেখেছে।’’ বিজেপি বিধায়ক আশাবাদী, আগামিদিনে তাঁর দাবিতে সিলমোহর দেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।

বৃহস্পতিবার জনবিন্যাস নিয়ে সংসদে একটি অভিযোগ করেন ছত্তীসগঢ়ের বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত। বাংলা ও বিহারের পাঁচটি জেলা নিয়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠনের দাবি করে তিনি বলেন, অনুপ্রবেশের ফলে দেশের পাঁচটি জেলার জনবিন্যাস বদলে গিয়েছে। নিশিকান্ত জানান, বিহারের পূর্ণিয়া, আরারিয়া, কাটিহার, কিষাণগঞ্জ এবং পশ্চিমবঙ্গের মালদহ, মুর্শিদাবাদের হিন্দু গ্রামগুলোকে ‘ধ্বংস করা হচ্ছে’। সাংসদের এ-ও দাবি, তাঁর নির্বাচনী এলাকার মধ্যে মধুপুর বিধানসভা এলাকাতেই ২০০-র বেশি বুথে জনসংখ্যা ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অনেক বুথে মুসলমান জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে ১০০ শতাংশ। তার পরেই তিনি দাবি করেন, ‘‘মালদহ, মুর্শিদাবাদ, আরারিয়া, কৃষ্ণগঞ্জ, কাটিহার এবং সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলকে নিয়ে একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হোক। সেখানে এনআরসি-ও চালু হোক।’’ বিজেপি সাংসদ এ-ও জানান, এই উপায় ছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলাগুলি থেকে হিন্দু সম্প্রদায় ‘শূন্য’ হয়ে যাবে। তার আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। ওই বৈঠকে তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জেলার একাধিক বিষয় তুলে ধরেন। বালুরঘাট লোকসভা এলাকায় চিকিৎসা, শিক্ষা, যাতায়াত ব্যবস্থা-সহ একাধিক বিষয়ের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ব্যাপারে আর্জি জানান। পাশাপাশি উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়ন মন্ত্রকে উত্তরবঙ্গের অংশকে অন্তর্ভুক্তির দাবিও জানান। বৈঠকের পর নিজেই ভিডিয়োবার্তায় সেই কথা জানান বিজেপি সাংসদ সুকান্ত।

শুক্রবার সংসদে তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দোপাধ্যায় আবার এই ইস্যুতে সুকান্ত-নিশিকান্তকে নিশানা করে দাবি করেন, বাংলা ভাগের চক্রান্ত করা হচ্ছে। তৃণমূল সাংসদের ভাষণের সময় সাময়িক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় সংসদের নিম্নকক্ষে। কিছু ক্ষণের জন্য মুলতুবি করতে হয় লোকসভার অধিবেশন। আর মুর্শিদাবাদের বিধায়কের দাবি প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদের তৃণমূলের সংসদ আবু তাহের খান বলেন, ‘‘ভোটে হেরে গিয়ে রাজ্যকে বিভাজিত করে যে ভাবেই হোক ক্ষমতায় আসতে চাইছে বিজেপি। এই পরিকল্পনা কখনও বাস্তবায়িত হবে না। আমরা হতে দেব না।’’

আরও পড়ুন
Advertisement