(বাঁ দিকে) রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস , মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলার শুনানি পিছিয়ে গেল ডিভিশন বেঞ্চে। শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় শুনানি হবে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে। মঙ্গলবার ওই মামলাটি শুনানির তালিকায় থাকলেও শেষ পর্যন্ত শুনানি হয়নি। বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর আইনজীবী সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের তরফে দাবি করা হয়, মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের করা মানহানি মামলায় অভিযোগের পক্ষে কোনও প্রমাণ ছাড়াই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ।
কলকাতা হাই কোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেন রাজ্যপাল। ওই মামলায় হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ অন্তর্বর্তী নির্দেশে জানায়, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে কোনও মানহানিকর মন্তব্য করতে পারবেন না মুখ্যমন্ত্রী। আগামী ১৪ অগস্ট পর্যন্ত ওই নির্দেশ বলবৎ থাকবে। সিঙ্গল বেঞ্চের ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন মমতার আইনজীবী। ১৯ জুলাই মামলা দায়ের করা হয়। হাই কোর্টের তরফে জানানো হয়, বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে শুনানি হবে মামলাটির।
কলকাতা হাই কোর্টে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে রাজ্যপাল যে মামলা করেছিলেন, তাতে তৃণমূলের দুই বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, রেয়াত হোসেন সরকার এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষকেও ওই মামলায় যুক্ত করা হয়। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, মামলাকারীর দাবি অনুযায়ী, তাঁর মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়েছে বেশ কিছু মন্তব্যে। ওই রকম মন্তব্য থেকে বিরত থাকা উচিত। এর পরেই ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করা হয় মুখ্যমন্ত্রীর তরফে। বুধবার হাই কোর্টে শুনানির সময় সৌমেন্দ্রনাথের দাবি, অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিতে গিয়ে মানহানি করা হয়েছে, এমন কোনও পর্যবেক্ষণ না রেখেই নির্দেশ দিয়েছেন সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি। তিনি বলেন, ‘‘জনগণের স্বার্থে ওই মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যপালের উদ্দেশে তাঁর কোনও মন্তব্যই মানহানিকর নয়। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে মানহানি হয়েছে, এমন কিছুই পাওয়া যায়নি। সিঙ্গল বেঞ্চ এই বিষয়টি খতিয়ে না দেখেই অন্তর্বর্তী নির্দেশ দিয়েছে।’’ বুধবার বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং বিচারপতি বিশ্বরূপ চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চে সময়ের অভাবে শুনানি সম্পূর্ণ হয়নি। বৃহস্পতিবার আবার শুনানির সম্ভাবনা ছিল। সেই শুনানি পিছিয়ে শুক্রবার হতে চলেছে।
সৌমেন্দ্রনাথ তাঁর মক্কেলের মন্তব্যে কোন যুক্তিতে মানহানি হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী যে মন্তব্য করেছেন, তা জনসমক্ষে রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেখান থেকে তিনি ওই মন্তব্য করেছেন। এ বিষয়ে জনগণের জানার অধিকার রয়েছে। এখন মূল ঘটনার অভিযোগকারিণী সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। ফলে এ নিয়ে রাজ্যপালের কী ভাবে মানহানি হল? এই মামলায় কোনও সংবাদমাধ্যমকে যুক্ত করা হয়নি।’’ অন্য দিকে, বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ও মানহানিকর মন্তব্য করেননি বলে তাঁর আইনজীবী যুক্তি দেন। এই মামলার পরবর্তী শুনানি শুক্রবার।