Digital Arrest at Nadia

সাত ঘণ্টা ধরে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ কল্যাণীর বৃদ্ধ! কোটি টাকা লুটের তদন্তে ধৃত ১৩, সন্দেহ দুবাই যোগের

নদিয়ার কল্যাণীর এক বৃদ্ধকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। উঠে আসছে দুবাই এবং কলম্বিয়ার যোগও।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:০৫
কল্যাণীর বৃদ্ধকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে প্রতারণার অভিযোগ। তদন্ত চালাচ্ছে রানাঘাট পুলিশ জেলার সাইবার অপরাধ শাখা।

কল্যাণীর বৃদ্ধকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে প্রতারণার অভিযোগ। তদন্ত চালাচ্ছে রানাঘাট পুলিশ জেলার সাইবার অপরাধ শাখা। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন। গ্রাফিক সহায়তা: এআই।

‘ডিজিটাল গ্রেফতার’-এর ফাঁদ পেতে ফের প্রতারণার অভিযোগ বাংলায়। এ বার প্রতারণার শিকার নদিয়ার কল্যাণীর বাসিন্দা এক বৃদ্ধ। বিত্তশালী ওই বৃদ্ধকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করে তাঁর থেকে প্রায় এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনার তদন্তে ইতিমধ্যে ১৩ জনকে গ্রেফতার করেছে রানাঘাট পুলিশ জেলার সাইবার ক্রাইম বিভাগ। মিলেছে আন্তর্জাতিক প্রতারণা চক্রের যোগও। পুলিশের সন্দেহ, কলম্বিয়া এবং দুবাইয়ের সাইবার প্রতারকেরা যুক্ত রয়েছেন এই চক্রের সঙ্গে।

Advertisement

জানা গিয়েছে, কল্যাণীর ওই বৃদ্ধের হোয়াট্‌সঅ্যাপে একটি ভিডিয়ো কল আসে। ফোনের ও পারে থাকা ব্যক্তি নিজেকে মুম্বই পুলিশের আধিকারিক বলে দাবি করেন। রানাঘাট পুলিশের সাইবার ক্রাইম বিভাগ সূত্রে খবর, ভিডিয়ো কলে ওই প্রতারক রানাঘাটের বৃদ্ধকে জানান, একটি গুরুতর অপরাধে নাকি তাঁর নাম জড়িয়ে গিয়েছে। অভিযোগ, এ কথা বলে তাঁকে ‘ডিজিটাল গ্রেফতার’ করা হয়। তার পর বিভিন্ন ভাবে ভয় দেখিয়ে একটি নির্দিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে বলা হয় তাঁকে। ঘাবড়ে গিয়ে দফায় দফায় প্রতারকের দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বৃদ্ধ প্রায় এক কোটি টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে প্রতারিত হয়েছেন বুঝতে পেরে থানায় অভিযোগ জানান তিনি।

পুলিশি তদন্তে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, গুজরাত এবং দিল্লির যোগ উঠে আসে। প্রায় এক মাস ধরে ওই রাজ্যগুলিতে অভিযান চালায় রানাঘাট পুলিশ জেলার সাইবার থানার একটি দল। গ্রেফতার হন ১৩ অভিযুক্ত। পুলিশ সূত্রে খবর, সাইবার অপরাধী সন্দেহে ধৃত ওই ১৩ জনকে জেরা করে আন্তর্জাতিক একটি চক্রেরও সন্ধান পান পুলিশকর্মীরা। উঠে আসে কলম্বিয়া এবং দুবাইয়ের যোগ। ধৃত ১৩ জন অভিযুক্ত একটি আন্তর্জাতিক সাইবার প্রতারণা চক্রের অংশ হিসাবে কাজ করতেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

জানা গিয়েছে, ধৃতদের মধ্যে কয়েক জনকে গত মঙ্গলবার গুজরাত থেকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে নিয়ে আসা হয়েছে রাজ্যে। তাঁদের জেরা করে এই মামলার তদন্তের বাকি জট ছাড়াতে চাইছেন সাইবার ক্রাইম বিভাগের তদন্তকারী আধিকারিকেরা। এই প্রতারণা চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না এবং এই চক্র আরও কাউকে প্রতারিত করেছে কি না, সে বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছে পুলিশ। সাইবার শাখার তদন্তকারী দলের সন্দেহ, ধৃতেরা এই কায়দায় আরও অনেকের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রতারণার মোট অঙ্কও আরও বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার সানি রাজ জানিয়েছেন, কল্যাণীর ঘটনায় অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে তদন্ত এখনও চলছে।

Advertisement
আরও পড়ুন