—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বিভিন্ন রাজ্যে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে হলে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে না সিবিআইকে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সি টি রবিকুমার এবং বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের বেঞ্চ গত কাল এই রায় দিয়েছে।
অন্ধ্রে কর্মরত দুই কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের জেরে শুরু হওয়া সিবিআই তদন্ত খারিজ করেছিল অন্ধ্রপ্রদেশ হাই কোর্ট। গত কাল হাই কোর্টের সেই রায় বাতিল করেছে সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতিরা বলেছেন, ‘‘যেখানেই কর্মরত থাকুন না কেন, তথ্যগত অবস্থান হল, তাঁরা কেন্দ্রীয় সরকার বা সরকারি মালিকানাধীন সংস্থার কর্মী এবং দুর্নীতি-দমন আইনে তাঁদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযোগ উঠেছে। এই আইনটি কেন্দ্রীয় আইন।’’ অন্ধ্রে কর্মরত কেন্দ্রীয় সরকারের ওই কর্মীরা সিবিআইয়ের এফআইআর চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে গিয়েছিলেন। তাঁদের যুক্তি ছিল, অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার রাজ্যে তদন্ত চালানোর ক্ষেত্রে সিবিআই-কে যে ঢালাও সম্মতি (জেনারেল কনসেন্ট) দিয়ে রেখেছিল, রাজ্য ভাগ হওয়ার পরে গঠিত নতুন অন্ধ্রপ্রদেশের ক্ষেত্রেও তা আপনি-আপনি প্রযোজ্য হয়ে যায় না। হাই কোর্ট সেই যুক্তি মেনে দুর্নীতি দমন আইনে অভিযুক্ত ওই দু’জনের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের এফআইআর খারিজ করে বলে, এ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সংস্থাটিকে নতুন করে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সম্মতিনিতে হবে।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি রবিকুমার তাঁর লেখা ৩২ পাতার রায়ে স্পষ্ট জানিয়েছেন, সিবিআই-কে অন্ধ্রের কাছে ফের ‘জেনারেল কনসেন্ট’ চাইতে হবে বলে হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তা ঠিক নয়। এ ক্ষেত্রে ২০১৪ সালের ২৬ মে-র একটি সার্কুলার মেমো অনুযায়ী, ওই বছরের ১ জুন তারিখে অবিভক্ত অন্ধ্রপ্রদেশে চালু থাকা আইনগুলিতে কোনও পরিবর্তন, সংশোধন বা কোনও আইন প্রত্যাহার না হলে রাজ্য ভাগের পরে তৈরি হওয়া তেলঙ্গানা ও অন্ধ্রের ক্ষেত্রেও তা বলবৎ থাকবে।
বস্তুত, এই মামলায় সুপ্রিম কোর্ট মূল যে প্রশ্নটি তুলে ধরেছে, তা হল— শুধুমাত্র কোনও রাজ্যের পরিধিতে কাজ করছেন বলে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও কর্মচারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করতে সিবিআই-কে রাজ্যের অনুমতি নিতে হবে কেন? শীর্ষ আদালতের মতে, যেখানে কেন্দ্রীয় আইনে অপরাধের অভিযোগ উঠেছে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী, তাই সিবিআইয়ের রাজ্যের কাছে এই ধরনের অনুমতি নেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই। প্রসঙ্গত, আজই ছিল বিচারপতি রবিকুমারের কর্মজীবনের শেষ দিন।