পদমর্যাদার নাম বদলে নতুন পদ্ধতিতে ডিএসপিকে এই গোয়েন্দা বাহিনীতে বলা হবে জয়েন্ট আসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। ইনস্পেক্টরদের বলা হবে ইন্টেলিজেন্স অফিসার। কনস্টেবলকে বলা হবে ইন্টালিজেন্স আসিস্ট্যান্ট।
ফাইল চিত্র।
রাজ্যের মাটিতে জঙ্গি সংগঠনগুলির জাল কত দূর বিস্তৃত কিংবা কোথায় রাজনৈতিক গোলমালের আশঙ্কা রয়েছে, তার সব খোঁজখবর রাখাই রাজ্য গোয়েন্দা দফতর বা আইবি-র কাজ। আর সেই লক্ষ্যে এ বার বদল ঘটছে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের অন্দরে।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘ইন্টেলিজেন্স বুরো’ (আইবি)-র ধাঁচে নিজেদের দফতরে নিজস্ব ক্যাডার বাহিনী তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে নবান্ন। রাজ্য পুলিশের তরফে ওই নিজস্ব বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্তকে সম্প্রতি ছাড়পত্র দিয়েছে নবান্ন। দ্রুত ওই নিয়োগ শুরু হবে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
এমনিতেই পুলিশে শূন্য পদের সংখ্যা অনেক। থানায় থানায় ঘাটতি রয়েছে কর্মীর। একই চিত্র রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের অন্য বিভাগে। প্রশ্ন উঠেছে, শুধু গোয়েন্দা বাহিনীকে সাজালেই কি সমস্যার সমাধান হবে? গোয়েন্দাদের পাঠানো রিপোর্ট যাঁরা কার্যকর করেন, সেখানেও ভাল মানের অফিসার নিয়োগের প্রয়োজনীয়তার কথা উঠে এসেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, আইবি-তে নিজস্ব বাহিনী নিয়োগের সঙ্গে বদলে যাবে সেখানকার বিভিন্ন পদ মর্যাদার নামও। মূলত একক ভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার লক্ষ্যেই ওই নিজস্ব বাহিনী তৈরি করা হচ্ছে। ডিরেক্টর আইবি-র অধীন থাকবে ওই বাহিনী।
নবান্ন সূত্রের খবর, ঠিক হয়েছে গোয়েন্দা বাহিনীর ৬০ শতাংশ লোক নেওয়া হবে নিজস্ব ক্যাডার হিসেবে। বাকি চল্লিশ শতাংশ রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ থেকে ডেপুটেশনের ভিত্তিতে কর্মী ও অফিসারদের নিয়োগ করা হবে। নিজস্ব বাহিনীতে ডিএসপি থেকে কনস্টেবল পদের কর্মী-অফিসার থাকবেন। সেন্ট্রাল আইবি, সিবিআই বা এনআইএ-তেও ঠিক এমনটাই রয়েছে।
রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, ওই বাহিনীর জন্য নতুন নিয়োগ করা হবে। তবে তার আগে এখন যাঁরা সেখানে কর্মরত রয়েছেন, তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হবে তাঁরা পাকাপাকি ভাবে আইবি-তে থেকে যেতে চান কি না। বাইরে থেকে যাঁদের নিয়োগ করা হবে, তাঁরা শুধুমাত্র গোয়েন্দার কাজই করবেন। তাঁদের থানায় বা অন্যত্র বদলি করা হবে না।
এখন পুলিশের বিভিন্ন বিভাগ থেকে কর্মী-অফিসারদের ডেপুটেশনে আইবি বা রাজ্য গোয়েন্দা দফতরে নিয়োগ করা হয়। ডেপুটেশনের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তাঁরা পুরনো জায়গাতে ফিরে যান। এর ফলে গোয়েন্দা কাজের ধারাবাহিকতা নষ্ট হয় বলে মত একাধিক প্রাক্তন গোয়েন্দা কর্তার। নতুন এই পদ্ধতিতে গোয়েন্দা কর্মীদের সম্পূর্ণ ভাবে এই কাজের জন্যই প্রশিক্ষিত করা হবে। একই সঙ্গে কর্মী-অফিসারদের নাম-পরিচয়ের ক্ষেত্রে রক্ষা করা হবে চূড়ান্ত গোপনীয়তা। সেন্ট্রাল আইবি ও এসআইবিতে এই পদ্ধতিই মেনে চলা হয় বলে তাঁদের দাবি।
পদমর্যাদার নাম বদলে নতুন পদ্ধতিতে ডিএসপিকে এই গোয়েন্দা বাহিনীতে বলা হবে জয়েন্ট আসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর। ইনস্পেক্টরদের বলা হবে ইন্টেলিজেন্স অফিসার। কনস্টেবলকে বলা হবে ইন্টালিজেন্স আসিস্ট্যান্ট।
সূত্রের খবর, শুধু সদর দফতর নয়। জেলায় জেলায় যে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর বা আইবি-র লোকাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (এলআইইউ) রয়েছে, সেখানেও একই পদ্ধতিতে বাহিনী নিয়োগ করা হবে।