(বাঁ দিক থেকে) দেব এবং পার্থ ভৌমিক। ছবি: সমাজমাধ্যম।
ভোট মিটতেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগী সাংসদ দেব (দীপক অধিকারী)। বুধবার এ নিয়ে রাজ্যের সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিকের সঙ্গে প্রশাসনিক বৈঠকও করেছেন। বৈঠকের পর সমাজমাধ্যমে সাংসদ ঘোষণা করেছেন, শীঘ্রই প্রকল্পের কাজ শুরু হতে চলেছে।
দেবের মতো সেচমন্ত্রী পার্থও এ বার লোকসভা ভোটে ব্যারাকপুর কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন। তিনি জিতেওছেন। নিয়ম বলে, সাংসদ হিসাবে শপথ গ্রহণের আগে পর্যন্ত তিনি সেচমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব সামলাতে পারবেন। সেই নিয়ম মেনে মাস্টার প্ল্যানের কাজ শুরুতে বুধবারের এই বৈঠক। বৈঠকে রাষ্ট্রমন্ত্রি সাবিনা ইয়াসমিন এবং সেচ ও জলপথ দফতরের প্রশাসনিক আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকের পর দেব সমাজমাধ্যমের পোস্টে লিখেছেন, ‘‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ। খুব শীঘ্রই ঘাটাল মাস্টারকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে আজ প্রশাসনিক সভা হল। ঘাটালের মানুষের সহযোগিতা নিয়ে এই প্রকল্পটি শীঘ্রই শুরু হবে।’’
এ বারও ঘাটালের ভোটে তুরুপের তাস ছিল সেই ‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান।’ সেই ১৯৫৯ সাল থেকে মান সিংহের রিপোর্টের ভিত্তিতে প্রকল্পের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। এর পরেও এই প্রকল্প নিয়ে এত টানাহ্যাঁচড়া দেখে হতবাক ঘাটালবাসীও। এক সময় অবশ্য এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হওয়ার পথে অনেকটাই এগিয়েছিল। প্রকল্পের সলতে পাকিয়েছিল বামেরাই। বাম আমলেই টাকা বরাদ্দের পর ঘটা করে প্রকল্পের উদ্বোধনও হয়েছিল। তবে মাঝপথে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে টাকা বরাদ্দ নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের টালবাহানায় আটকে রয়েছে গোটা প্রকল্প। ঘাটালের ওই প্রকল্পই এখন প্রচারের অন্যতম হাতিয়ার ছিল দু’পক্ষের।
ভোটের মুখে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ঘোষণা করেছিলেন, ওই প্রকল্প রাজ্য সরকার একাই কার্যকর করবে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই লোকসভা ভোটের প্রচারের কেন্দ্রে থেকেছে এই মাস্টারপ্ল্যান। শাসকদল বিভিন্ন সভা, রোড-শোয়ে মাস্টারপ্ল্যানকে প্রচারে টেনে এনেছিল। পিছিয়ে ছিল না বিজেপিও। মাস্টারপ্ল্যানের সুফল পেতে তেড়েফুঁড়ে নেমেছিল তারাও। ভোটে জিতলেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর টাকাতেই মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হবে, এই বলে প্রচার করেছিল বিজেপিও। এর পরেই ঘাটাল জুড়ে যে আলোচনা ঝড় তুলেছে, তা হল— মাস্টারপ্ল্যান কার টাকায়? মোদীর না মমতার? তর্কের গতি বেড়েছে পিংলায় মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া শর্ত নিয়ে। ঘাটাল, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম লোকসভা আসন জিতলেই ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান হবে, মুখ্যমন্ত্রীর ওই কথায় প্রাথমিক ভাবে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। পরে অবশ্য অভিষেক আরও এক বার জানিয়ে দেন, মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত করবে রাজ্য সরকারই।