Sujit Bose

মমতার নির্দেশে সুজিত যাবেন সন্দেশখালি, পদ পূরণে সিদ্ধান্ত নেবেন তৃণমূলনেত্রী

শেখ শাহজাহানকে ধরতে ইডির অভিযান, পাল্টা ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণ, গ্রেফতারি, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমিদখল-সহ একাধিক অভিযোগ ঘিরে গত কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সন্দেশখালিতে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
সন্দেশখালি শেষ আপডেট: ২৯ জুলাই ২০২৪ ১৮:৩৬
Mamata Sujit

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

এখনও রাজ্য রাজনীতির চর্চায় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি। সেখানকার পরিস্থিতি দেখে আসতে এ বার দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুকে দায়িত্ব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দলের নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশে আগামী শনিবারই সন্দেশখালি যাবেন সুজিত। ওই দিন এলাকার প্রশাসনিক ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে একটি বৈঠক করবেন মন্ত্রী।

Advertisement

শেখ শাহজাহানকে ধরতে ইডির অভিযান, পাল্টা ইডি আধিকারিকদের উপর আক্রমণ, গ্রেফতারি, তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে জমিদখল-সহ একাধিক অভিযোগ ঘিরে গত কয়েক মাস ধরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে সন্দেশখালিতে। এর ফলে গত কয়েক মাস ধরে ওই এলাকায় উন্নয়নের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সেখানকার বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার প্রশাসনিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠকের পরামর্শ দিয়েছেন মন্ত্রীকে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে থাকতে বলা হয়েছে সন্দেশখালির বিধায়ক সুকুমার মাহাতোকেও। সন্দেশখালিতে তৃণমূলের বেশ কিছু সাংগঠনিক পদ ফাঁকা রয়েছে। সেই সব পদে কাকে কাকে বসানো যায়, সেই বিষয়ে বিধায়ক সুকুমারকে নাম প্রস্তাব করার দায়িত্ব দিয়েছে তৃণমূল। শনিবার তাঁর প্রস্তাবিত নামের তালিকা সুকুমার সুজিতের কাছে জমা দেবেন বলে খবর। এর পর সুজিত মারফত সেই তালিকা পৌঁছবে তৃণমূলনেত্রী মমতার কাছে। তিনি অনুমোদন দিলে সাংগঠনিক পদাধিকারীদের নাম ঘোষণা করবে তৃণমূল। পুরো প্রক্রিয়াটি আগামী কয়েক দিনের মধ্যে শেষ করার লক্ষ্য নিয়েছে তৃণমূল।

শাহজাহানকাণ্ডে সন্দেশখালি যখন উত্তাল, তখন তৃণমূলের তরফে সেখানে পাঠানো হয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন সেচমন্ত্রী পার্থ ভৌমিককে। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন সুজিতও। তার পর লোকসভা ভোট হয়েছে। নির্বাচনের সময়ে বিক্ষিপ্ত গন্ডগোল হয়েছে সন্দেশখালির নানা এলাকায়। শেষ দফার ভোটের দিন উত্তপ্ত ছিল বসিরহাট লোকসভা আসনের সন্দেশখালি। সেখানে বার বার সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে বিজেপি এবং তৃণমূল। আহত হন তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ দু’জন। এক জন বিজেপি কর্মীও আহত হন। সন্দেশখালির বয়ারমারিতে এমন পরিস্থিতি হয় যে লাঠিচার্জ করতে হয় পুলিশকে।

অন্য দিকে, গত ফেব্রুয়ারিতে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণে উঠে আসে সন্দেশখালি প্রসঙ্গ। তিনি জানান, আরএসএসের ‘বাসা’ ওই এলাকা। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘জীবনে আমি কোনও দিন কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয় দিইনি।’’ সন্দেশখালিকাণ্ডে রাজ্য সরকারের পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এ-ও বলেন, ‘‘আগে টার্গেট শেখ শাহজাহান। ওকে টার্গেট করে ইডি ঢুকল। তার পরেই সবাইকে বার করে দিয়ে, সংখ্যালঘু, আদিবাসীদের মধ্যে ঝগড়া বাধিয়ে দিল।’’ তিনি এ-ও বলেছিলেন, ‘‘কারও কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকতে পারে। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। মহিলা সদস্যেরা, পুলিশ রয়েছে, বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে কথা শুনছেন তারা। রিপোর্ট করার পর সমস্যা থাকলে তা নিয়ে কাজ করা হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রী এ-ও জানিয়েছিলেন, সন্দেশখালি দাঙ্গাপ্রবণ এলাকাগুলির মধ্যে একটি।

প্রসঙ্গত, গত জানুয়ারি মাস থেকে রাজ্য রাজনীতির চর্চায় রয়েছে সন্দেশখালি। শাহজাহানের বাড়িতে ইডি আধিকারিকদের যাওয়া, তাঁর ‘অনুগামীদের’ প্রতিরোধ এবং কয়েক দিনের মধ্যে শাহজাহান এবং তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সন্দশখালিতে বেশ কিছু জায়গায় জারি করা হয়ে যায় ১৪৪ ধারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও পড়ুন
Advertisement