West Bengal Panchayat Election 2023

কথা দিয়েছিলেন অভিষেক, ‘নতুন তৃণমূলের মুখ’ সেই হসিনুদ্দিন এবং মঞ্জুকে প্রার্থী করা হল কেশপুরে

শাসকদল সূত্রে খবর, দু’জনেরই বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার কথা। অভিষেক প্রতিশ্রুতি রাখায় তিনি আপ্লুত বলে জানিয়েছেন হসিনুদ্দিন। খুশি মঞ্জুর পরিবার।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৩ ১৭:২৯
পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সেই মঞ্জু দলবেরা এবং শেখ হসিনুদ্দিনকে প্রার্থী করল তৃণমূল।

পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সেই মঞ্জু দলবেরা এবং শেখ হসিনুদ্দিনকে প্রার্থী করল তৃণমূল। নিজস্ব চিত্র।

পঞ্চায়েত ভোটের মুখ হিসাবে প্রকাশ্য সভায় তাঁদের তুলে ধরেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, তাঁরাই নতুন তৃণমূলের মুখ। পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে সেই শেখ হসিনুদ্দিন এবং মঞ্জু দলবেরাকে প্রার্থী করল তৃণমূল। শাসকদল সূত্রে খবর, দু’জনেরই বৃহস্পতিবার মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়ার কথা। অভিষেক প্রতিশ্রুতি রাখায় তিনি আপ্লুত বলে জানিয়েছেন হসিনুদ্দিন। খুশি মঞ্জুর পরিবার।

চলতি বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি কেশপুরের ভিড়ে ঠাসা সভায় ‘অরাজনৈতিক’ হসিনুদ্দিনকে মঞ্চে তুলে এনেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক। তাঁকে আলিঙ্গন করে অভিষেক জানিয়েছিলেন, হসিনুদ্দিন তৃণমূলের কেউ নন। কিন্তু তিনিই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁর দলের প্রার্থী হতে চলেছেন। দলের পদাধিকারী দম্পতি মঞ্জু এবং অভিজিৎ দলবেরাও অভিষেকের ডাকে মঞ্চে উঠেছিলেন। মঞ্জু দলের পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাঁর স্বামী অভিজিৎ বুথ সভাপতি। তৃণমূল সাংসদ তাঁদের সম্পর্কে জানিয়েছিলেন, পঞ্চায়েত সদস্য হওয়ার কারণেই মঞ্জুরা আবাস যোজনার টাকা নিতে চাননি। নব তৃণমূলের ‘মুখ’ সেই মঞ্জুদেরই যে এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী করা হবে, তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন অভিষেক। তৃণমূল সূত্রে দাবি, সেই মতো হসিনুদ্দিন এবং মঞ্জুকে প্রার্থী করা হয়েছে।

Advertisement

দলীয় সূত্রে খবর, বুধবার দু’জনকেই জানানো হয়েছে যে, তাঁরা এ বারের ভোটে প্রার্থী হচ্ছেন। হসিনুদ্দিনকে কেশপুরের কলাগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী করা হচ্ছে। আর মঞ্জুকে গোলাড় গ্রাম পঞ্চায়েতে। তাঁদের কাগজপত্র প্রস্তুতও রাখতে বলা হয়েছে। কেশপুরের ব্লক তৃণমূল সভাপতি প্রদ্যুৎ পাঁজা বলেন, ‘‘মঞ্জু এবং হসিনুদ্দিনকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। বুথ সভাপতিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁদের সহযোগিতা করার জন্য।’’

এ ব্যাপারে দু’জনের সঙ্গেই যোগাযোগ করে আনন্দবাজার অনলাইন। হসিনুদ্দিন বলেন, ‘‘ভাল লাগছে, উনি (অভিষেক) কথা দিয়ে কথা রেখেছেন।’’ মঞ্জুর সঙ্গে যোগাযোগ করা না গেলেও তাঁর স্বামী অভিজিৎ বলেন, ‘‘মঞ্জুকে দলের প্রতীকে প্রার্থী করা হয়েছে। কাগজপত্র রেডি রাখতে বলেছে।’’

কেশপুরের আনন্দপুরের সভায় অভিষেক যে ভাবে হসিনুদ্দিন এবং দলবেরা দম্পতিকে মঞ্চে তুলে সামনে এগিয়ে দিয়েছিলেন, তা অনেকের কাছে ‘চমকপ্রদ’ লেগেছিল। ‘নতুন তৃণমূলের’ অবয়ব দেখাতে গিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘এই ভদ্রলোকের নামে বাড়ি এসেছে। উনি প্রধানকে গিয়ে বলেছেন, আমি বাড়ির টাকা নেব না। উনি বলে এসেছিলেন, আমার এক ছেলে, এক মেয়ে। অনেক কষ্টে মেয়েকে পড়িয়ে বড় করেছি। ১ লাখ ৩০ হাজার টাকায় দুটো ঘরের ছোট বাড়িও যদি বানাই, বাড়তি আরও ৩ লাখ টাকা খরচ হবে। তা হলে আমি মেয়ের বিয়ে দিতে পারব না।’’ কেশপুরের একটি ওষুধের দোকানে কাজ করা হসিনুদ্দিনের বাড়ির ছবি দেখিয়ে অভিষেক বলেছিলেন, ‘‘এই হসিনুদ্দিনবাবুর মতো লোকেরাই নতুন তৃণমূলের মুখ। শুধু পশ্চিম মেদিনীপুর নয়, এটা সমগ্র বাংলার জন্যই প্রযোজ্য।’’ হসিনুদ্দিনের মেয়ের বিয়ের দায়িত্ব নেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অভিষেক।

প্রকাশ্য সভামঞ্চে মঞ্জুদেরও সাধারণ টালির বাড়ির ছবি দেখিয়েছিলেন অভিষেক। বলেছিলেন, ‘‘যাঁরা বলে, তৃণমূলের বুথ সভাপতি, পঞ্চায়েত সদস্য ফুলেফেঁপে উঠেছে, তাঁদের জানাই, মঞ্জুদেবীর শাশুড়ির নামে আবাসের ঘর বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু উনি প্রধানকে বলেছেন, উনি ওই ঘর নিতে চান না। কারণ, তিনি পঞ্চায়েত সদস্য এবং তাঁর স্বামী বুথ সভাপতি।’’

আরও পড়ুন
Advertisement