তমলুকের ওই সমবায় সমিতিতে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে পুলিশের লাঠিচার্জ। — নিজস্ব চিত্র।
সমবায় নির্বাচন ঘিরে তৃণমূলের সঙ্গে সিপিএম-বিজেপি জোটের সংঘাতে তপ্ত পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক। তমলুকের খারুই-গঠরা সমবায় সমিতির নির্বাচন রবিবার। সকাল থেকেই এ নিয়ে তপ্ত হয়ে ওঠে ওই এলাকা। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
রবিবার খারুই-গঠরা সমবায় সমিতির নির্বাচন ঘিরে তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। ওই সমবায়ে মোট আসন ৪৩টি। ৪৩টি আসনেই প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। একইসঙ্গে নন্দকুমার এবং মহিষাদলের মতো হাত ধরাধরি করে প্রার্থী দিয়েছে বাম-বিজেপি শিবিরও। বিজেপির অভিযোগ, তাদের ভোটারদের বাধা দিচ্ছে তৃণমূল। ভোটারদের ভয় দেখিয়ে বুথ স্লিপ ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের। এ নিয়ে প্রথম বচসা শুরু হয় দুই শিবিরের মধ্যে। পরে তা সংঘর্ষের আকার নেয়। পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠি চালায় পুলিশ। যদিও বাম এবং বিজেপির তোলা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
এ নিয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক বামদেব গুছাইত অভিযোগ করেন, তৃণমূল ওই সমবায়ের উপনির্বাচনে হেরে যাবে বলেই ভয় দেখাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘ওরা আমাদের মারধর করছে। আমাদের ভোটারদের ভয় দেখাচ্ছে। স্লিপ কেড়ে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বাইরের লোকজন এনে গন্ডগোলও করছে।’’ বামদেবের হুঁশিয়ারি, ‘‘এমন ঘটনা যদি না থামে, এলাকা শান্তিপূর্ণ না হলে পাল্টা দেখিয়ে দেব যে, আমরা কোনও অংশে কম নই।’’
তৃণমূলের পাল্টা দাবি, বিজেপি এবং সিপিএমের জোটই অশান্তির এলাকায় পরিবেশ তৈরি করেছে। এ নিয়ে শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূল নেতা রাজেশ হাজরা বলেন, ‘‘বিজেপি ময়নার বাকচা থেকে লোক এনেছে। তাদের মুখ এলাকার কেউ চেনে না। কিন্তু আমরা স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়েই ভোট পরিচালনা করেছি। ওদের কেউ যদি ভোট না দিতে পারে আমাকে বলুক। আমি ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।’’ পুলিশ যে ভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে, তার প্রশংসা করেছেন রাজেশ।
ঘটনাচক্রে, এই নিয়ে পূর্ব মেদিনীপুরের ৩টি সমবায় নির্বাচনে হাত ধরাধরি করে লড়াই করল বাম এবং বিজেপি। প্রথমে গত ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের ‘বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’-এর নির্বাচনে ‘সমবায় বাঁচাও মঞ্চ’ গড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়েছিল বাম-বিজেপি জোট। ৬৩টি আসনের সব ক’টিই দখল করে তারা। তবে মহিষাদলের কেশবপুর জালপাই রাধাকৃষ্ণ কৃষি সমবায় সমিতির নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ে বাম-বিজেপির ওই জোট। সমবায়টির পরিচালন সমিতির ৭৬টি আসনের মধ্যে ৬৮টি দখল করে তৃণমূল। মাত্র ৮টি আসন পায় বিজেপি-সিপিআইয়ের জোট।