নন্দীগ্রামে শহিদ স্মরণে আবার তরজায় শুভেন্দু অধিকারী এবং শেখ সুফিয়ান। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আবারও নন্দীগ্রামে ‘শহিদ দিবস’ পালন ঘিরে তরজায় জড়াল তৃণমূল এবং বিজেপি। গত কয়েক বছরের মতো এ বারও শহিদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে গিয়ে ‘কাদা ছোড়াছুড়ি’ করল শাসক এবং বিরোধী।
জমিরক্ষা আন্দোলন পর্বে ২০০৭ সালের ৭ জানুয়ারি পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে গুলিতে প্রাণ হারান ভরত মণ্ডল, শেখ সেলিম, বিশ্বজিৎ মাইতির মতো আন্দোলনকারীরা। এই কাণ্ডের জন্য রাজ্যের তৎকালীন শাসকদল সিপিএমকে দায়ী করে তৃণমূল। ওই ঘটনাকে স্মরণ করে পরের বছর থেকে সোনাচূড়ার ভাঙাভেড়া সেতুর কাছে ‘শহিদ তর্পণ’ কর্মসূচি পালন করে আসছে তৃণমূল। তবে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তৃণমূল ছেড়ে শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর বদলে যায় ‘পরম্পরা’। জমি আন্দোলনে কার অবদান বেশি, এ নিয়ে চাপানউতর অব্যাহত। মঙ্গলবারও নন্দীগ্রামে তৈরি শহিদ মিনারে যান বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু এবং অন্যান্য নেতা। অন্য দিকে, ভাঙাভেড়া সেতুতে স্মরণসভার আয়োজন করে তৃণমূল। শোকপালনের কর্মসূচি থেকে দুই দলের নেতৃত্ব একে অপরকে আক্রমণ শানিয়েছেন। শুভেন্দু নাম না-করেও তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ানকে তুলোধনা করেন। পাল্টা নাম করে শুভেন্দুর প্রতি বিষোদ্গার করেছেন সুফিয়ান। সব মিলিয়ে ‘শহিদ স্মরণ’কে কেন্দ্র করে তপ্ত রাজনীতি।
শুভেন্দুর তৃণমূল-ত্যাগের আগে পর্যন্ত নন্দীগ্রামের শহিদ মিনারে ৭ জানুয়ারি সকাল থেকে নানা কর্মসূচি পালন করত রাজ্যের শাসকদল। ভোর থেকে কীর্তন, পূজাপাঠ, শহিদ তর্পণ ইত্যাদি হত। হাজার হাজার মানুষ স্মরণসভায় হাজির হতেন। এক মঞ্চে থাকতেন শুভেন্দু, আবু তাহের, সুফিয়ানের মতো জমি আন্দোলনের নেতারা। কিন্তু ২০২০ সালের পর থেকে ছবিটা বদলে গিয়েছে। মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ তৃণমূলের ‘শহিদ মঞ্চ’-এ হাজির হন ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির সকল সদস্য। ছিলেন তৃণমূলের রাজ্যনেত্রী জয়া দত্ত, পটাশপুরের বিধায়ক তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তম বারিক, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী এবং বিধায়ক অখিল গিরি। সেই সভা থেকে শুভেন্দুকে নিশানা করেন তৃণমূল নেতৃত্ব। ওঠে ‘গদ্দার’ স্লোগান।
তৃণমূলের কর্মসূচির খানিক পরেই নন্দীগ্রামে ঢোকেন শুভেন্দু। শহিদ মিনারে মৃতদের উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানানোর পর বিরোধী দলনেতার মন্তব্য, ‘‘তারাচাঁদবাড় থেকে একটা চোর এসেছিল। জাহাজ বাড়ি করেছে। সকালে আমাকে গালাগালি করেছে। আমি যার দিকে তাকিয়েছি, তার কী হাল হয়েছে, দেখেছেন তো? শাহজাহানের (সন্দেশখালির প্রাক্তন তৃণমূল নেতা) যা অবস্থা করেছি, আপনারও তা-ই করব।’’