মৃত অর্ঘ্য ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।
ছেলের আবদার মেটাতে মাস কয়েক আগে দামি স্মার্টফোন কিনে দিয়েছিলেন দম্পতি। সেই ফোনই কাড়ল তরুণের প্রাণ। মোবাইলে অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েন অর্ঘ্য ভট্টাচার্য নামে ১৮ বছরের এক ছাত্র। গেমের জন্য টাকা জোগাড় করতে ব্যর্থ হয়ে ছাত্র আত্মঘাতী হয়েছেন বলে দাবি পরিবারের। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শেরপুর এলাকার ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, কাঁথি মডেল ইনস্টিটিউশনের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিলেন অর্ঘ্য।
একটি বিমা সংস্থার এজেন্ট উত্তম ভট্টাচার্যের একমাত্র সন্তান অর্ঘ্য পড়াশোনায় বেশ ভাল ছিলেন। ছেলের বায়নায় কয়েক মাস আগে তাঁকে মোবাইল কিনে দেন উত্তম। ছেলের পড়াশোনার সুবিধে হবে ভেবে মোবাইল কিনে দিলেও অর্ঘ্য ধীরে ধীরে অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছিল বলে ছেলেকে মোবাইল কম ব্যবহার করতে বলেছিলেন বাবা-মা। উল্টে অনলাইন গেমের জন্য বাড়ির কাছে টাকা চাইতে থাকেন ওই ছাত্র। প্রথম দিকে হাতখরচ ভেবে টাকা দিলেও পরে তা দেওয়া বন্ধ করে দেন বাবা। তাতে অর্ঘ্য মনমরা হয়ে পড়েছিলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর।
সোমবার বেলার দিকে ঘরের মধ্যে অর্ঘ্যের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পরিবার। কাঁথি থানার পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। এই ঘটনা নিয়ে কাঁথি পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অতনু গিরি বলেন, ‘‘অনলাইনে মোবাইল গেম খেলার জন্য এমন পরিণতি ভাবা যায় না! শুধু অর্ঘ্যই নন, এলাকার বহু কিশোরই এখন অনলাইন গেমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। আমাদের অভিভাবকদের আরও সতর্ক হতে হবে।’’
অন্য দিকে, স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে কাঁথি শহর এবং সংলগ্ন এলাকায় রমরমিয়ে মাদকের কারবার চলছে। একের পর এক পুলিশি অভিযানে বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার হয়েছে। মাদক, মোবাইল গেম ইত্যাদির নেশায় আসক্তি ক্রমশ যুবসমাজকে বিপথে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।