হাসপাতালে নার্সদের বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে চিকিৎসক এবং নার্সদের সঙ্গে রোগীর পরিজনদের গন্ডগোল এমনকি, মারামারির ঘটনা প্রায়ই প্রকাশ্যে আসে। এ বার সরকারি হাসপাতালের মধ্যে এক নার্সকে মারধর করার অভিযোগ উঠল চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এই নিয়ে শোরগোল উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর সরকারি হাসপাতালে। নার্সদের টানা বিক্ষোভের পর ওই চিকিৎসক তাঁর কজের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন বলে খবর।
নার্সদের অভিযোগ, রেণুকা খাতুন নামে এক চিকিৎসক অহেতুক তাঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এই বারের গন্ডগোলের সূত্রপাত গত শনিবারের একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে। অভিযোগ, এক নার্সের সঙ্গে বচসায় জড়ান রেণুকা। তার পর তাঁর গায়ে হাতও তোলেন। পরে বিষয়টি জানাজানি হতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শিল্পী দাস নামে ‘আক্রান্ত’ নার্সের সহকর্মীরা। তাঁদের দাবি, প্রথমে হাসপাতাল সুপার ওই চিকিৎসককে ঘটনা নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলে দেন, যা করেছেন ঠিক করেছেন। তাতে আরও উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। নার্সেরা কাজ বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন। শেষ পর্যন্ত ওই চিকিৎসক ‘সরি’ বলেন। তাতে আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।
হাসপাতালের একটি সূত্রে খবর, হাইব্রিড ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে কাজ করছিলেন ছিলেন এক জন নার্স। সেই সময় ওই ইউনিটে ঢোকেন ওই মহিলা চিকিৎসক। নার্সদের দাবি, নিয়ম অনুযায়ী ওই ইউনিটে জুতো পরে ঢোকা যায় না। কিন্তু রেণুকা জুতো পরে ঢুকেছিলেন। তাঁকে শিল্পী নামে ওই নার্স জুতো খুলে আসার কথা বলায় তর্কের শুরু। অভিযোগ, তিনি নার্সের বাপবাপান্ত করেন। শুরু হয় দু’জনের মধ্যে বাদানুবাদ। তখনই ওই নার্সের গায়ে হাত তোলেন চিকিৎসক।
হাসপাতালের সুপার সুরজ সিংহ ছুটিতে থাকায় সরাসরি এ নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জানাতে পারেননি নার্সেরা। সোমবার সুপার হাসপাতালে এলে তাঁর কাছে যান নার্সেরা। সুপারের অফিসের সামনে চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। অভিযুক্ত ওই চিকিৎসককে নার্সের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন সুপার। কিন্তু, প্রথমে তিনি রাজি হননি। পরে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর, আপাতত ওই চিকিৎসককে কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদিও সংবাদমাধ্যমের সামনে এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সুপার। রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এক মহিলা চিকিৎসক নার্সের উপর হাত তুলেছেন, এমনটা শুনেছি। সবাইকে নিয়ে বসে বিষয়টি মিটমাট করে দেওয়া হবে।’’