—প্রতীকী চিত্র।
শুভেন্দু অধিকারীর খাস তালুক কাঁথির সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে তমলুক, হলদিয়ার সমস্ত আসনেই শোচনীয়ভাবে হার হয়েছে বিজেপি প্রার্থীদের। দলের আদি-নব্যের কোন্দল এর পিছনে বড় ভূমিকা নিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মাত্র কয়েক মাস আগে লোকসভা ভোটে কাঁথি ও তমলুক দুই কেন্দ্রেই তৃণমূলকে পরাজিত করেছিল বিজেপি। তার কয়েক মাসের মধ্যেই পর-পর জেলার দু’টি গুরুত্বপূর্ণ সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে জয়লাভ করে উজ্জীবিততৃণমূল নেতা-কর্মীরা। একে অধিকাংশই তৃণমূলের ‘মধুর প্রতিশোধ’ হিসাবে দেখছেন। সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপির ভরাডুবি নিয়ে রাজনৈতিক চর্চাও শুরু হয়েছে। কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে ১০৮ টি আসনের মধ্যে ১০১ টি আসনে জিতেছে তৃণমূল। বিজেপি পেয়েছে মাত্র ৭ টি আসন। একটি আসনে জিতেছেন নির্দল প্রার্থী।
শুভেন্দুর নিজের এলাকা হিসাবে পরিচিত কাঁথিতে সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থীরা অধিকাংশ আসনে পরাজিত হয়েছেন। এরই পাশাপাশি তমলুক, হলদিয়া মহকুমা এলাকার ২৬ টি আসনে হেরেছে বিজেপি। হারের পাশাপাশি তৃণমূল প্রার্থীদের সঙ্গে বিজেপি প্রার্থীদের ভোট প্রাপ্তির বড় ব্যবধান নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। বিজেপি প্রার্থীদের একাংশের অভিযোগ, দলের আদি ও নব্য গোষ্ঠীর বিরোধের জেরে দলের একাংশ নেতা-কর্মী ও পরিচিত সমর্থক ভোট দিতেই যাননি। অধিকাংশ আসনে কার্যত ‘ওয়াক ওভার’ পেয়ে গিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
মহিষাদল নির্বাচন ক্ষেত্রে ১১ টি আসনে মোট ভোটার ছিলেন সাড়ে ৭ হাজার।কিন্তু ভোট দিয়েছেন মাত্র আড়াই হাজার ভোটার। এখানে তৃণমূল প্রার্থীরা বিজেপি প্রার্থীদের চেয়ে গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ ভোটের ব্যবধানে জিতেছেন। ফলে প্রশ্ন উঠেছে, কয়েক মাস আগে লোকসভা নির্বাচনে জেলার তমলুক ও কাঁথি, দুই কেন্দ্রে ভাল ব্যবধানে বিজেপি প্রার্থীরা জয়লাভ করলেও সমবায় ব্যাঙ্কে এমন শোচনীয় হার কেন হল?
দলীয় সূত্রের খবর, কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে লড়াই করা অধিকাংশই শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ কিংবা অনুগামী হিসেবে পরিচিত। তাই বিজেপির শুভেন্দু বিরোধী বা আদি গোষ্ঠীর নেতা-কর্মীদের অনেকেই ভোট প্রচারে নামেননি এমনকি ভোট দিতে যাননি। বিজেপির জেলা (তমলুক) সহ-সভাপতি আনন্দময় অধিকারী বলেন, ‘‘ভোটদানের হার কম থাকার বিষয়টি নজরে এসেছে। তবে শুধু আমাদের দলের অনেক ভোটার আসেননি, এমন নয়। তৃণমূলেরও অনেক ভোটার আসেননি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলে আদি ও নব্য গোষ্ঠীর কারণে একাংশ ভোটার ভোট দেননি, এমন অভিযোগ ঠিক নয়।’’