Midnapur Medical College

‘স্যালাইনে অসুস্থ’ প্রসূতির দ্বিতীয় বার অস্ত্রোপচার, রাখতে হয়েছে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ভেন্টিলেশনে

কেশপুরের বাসিন্দা নাসরিন খাতুন। বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ‘মাতৃমা’ বিভাগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। বৃহস্পতিবার ফের তাঁর অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকেরা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫ ২০:৩৬
One woman in Ventilation support after delivery new born in Midnapore Medical College

প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কলেজে তাঁর আবার অস্ত্রোপচার করা হয়। তার পর থেকেই ভেন্টিলেশনে রয়েছেন নাসরিন খাতুন নামে এক মহিলা। ওই হাসপাতালে প্রসূতিদের নিম্নমানের স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাশাপাশি, পরিবার প্রশ্ন তুলেছে কেন তাঁর দ্বিতীয় বার অস্ত্রোপচার করা হল?

Advertisement

কেশপুরের বাসিন্দা নাসরিন। বুধবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ‘মাতৃমা’ বিভাগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তিনি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। পরে তাঁকে জেনারেল বেডে স্থানান্তরিত করেন চিকিৎসকেরা। পরিবারের দাবি, জেনারেল বেডে নাসরিনের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। বন্ধ হয়ে যায় প্রস্রাব। তড়িঘড়ি তাঁকে পাঠানো হয় আইসিইউ-তে। কিন্তু তাতেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে আবার অস্ত্রোপচার করা হয় নাসরিনের। তার পর থেকে শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। চিকিৎসকেরা তাঁকে ভেন্টিলেশনে স্থানান্তরিত করার সিদ্ধান্ত নেন। নাসরিনের আত্মীয় ইনসান আলির কথায়, ‘‘ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে ওকে। তবে দেখে মনে হচ্ছে মাত্র ২০ শতাংশ সুস্থ আছে ও।’’

কেশপুরের বাসিন্দা শেখ আজিদ আলির অভিযোগ, চিকিৎসায় গাফিলতি ছাড়াও স্যালাইনের সমস্যা রয়েছে। আজিদের প্রশ্ন, ‘‘নাসরিনের সন্তান কেন তার মায়ের কাছে থাকতে পারছে না? কেন সদ্যোজাতের সঙ্গে বাড়ি ফিরতে পারলেন না নাসরিন? এর দায় কার?’’ নাসরিনের সন্তান সুস্থই আছে। হাসপাতাল থেকে ছুটি পাওয়ার পর তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে কেশপুরের বাড়িতে। কিন্তু আনন্দে থাকতে পারছেন না পরিবারের লোকেরা। মাথায় নাসরিনের চিন্তা ঘুরছে। পরিবারের লোকেরা জানিয়েছেন, তাঁদের পাশের বাড়ির এক মহিলার দু’মাসের সন্তান রয়েছে। নাসরিনের সদ্যোজাত খাওয়ার জোগাড় হচ্ছে সেখান থেকেই।

পাঁচ প্রসূতি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তাঁদের সন্তান জন্ম দেওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন মেদিনীপুর মেডিক্যালে। তাঁদের মধ্যে শুক্রবার সকালে এক জনের মৃত্যু হয়। মৃতের নাম মামণি রুইদাস। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাকি চার জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁর বাড়ি গড়বেতা থানা এলাকায়। এই মৃত্যু এবং প্রসূতিদের অসুস্থ হয়ে পড়া প্রসঙ্গে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মৌসুমি নন্দী বলেন, “আমরা সব রকম দিক থেকে ব্যবস্থা করছি রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার জন্য।” তবে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের রেসিডেন্ট ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের প্রশ্ন, ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ সংস্থার স্যালাইন কেন ব্যবহার করা হল? শনিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে সংগঠনের তরফে পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। কী ভাবে এমন ঘটনা ঘটল? দুর্নীতি বা গাফিলতির প্রমাণ হলে দৃষ্টান্তমূলক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকদের সংগঠন।

Advertisement
আরও পড়ুন