NIA attack

সন্দেশখালি, বনগাঁর পর এ বার ভূপতিনগর, বিস্ফোরণের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে এনআইএ গোয়েন্দারা

জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছিল এনআইএ। তখনই তাঁদের গাড়ির উপর হামলা হয়। ভাঙচুর করা হয় গাড়িতে। দুই এনআইএ আধিকারিক আহত হয়েছেন বলেও খবর।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
ভূপতিনগর শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:০৮
ভূপতিনগরে উত্তেজনা।

ভূপতিনগরে উত্তেজনা। — সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের এক্স হ্যান্ডল থেকে পাওয়া ভিডিয়ো।

পূর্ব মেদিনীপুরের ভূপতিনগরে বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্তে গিয়ে হামলার মুখে পড়ল এনআইএ। গাড়ি ভাঙচুর হল। দুই এনআইএ আধিকারিক সামান্য আহত হয়েছেন বলেও খবর। এর আগে গত ৫ জানুয়ারি উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালিতে তৃণমূল নেতা শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশি চালাতে গিয়ে তৃণমূল নেতার অনুগামীদের হামলার মুখে পড়েছিল ইডি। কার্যত প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের। সেই ঘটনার পর তোলপাড় পড়ে যায় গোটা রাজ্য জুড়ে। তার রেশ কাটার আগেই ভোটমুখী বাংলায় এ বার আক্রান্ত হল এনআইএ।

Advertisement

২০২২ সালের ২ ডিসেম্বর ভগবানপুর ২ ব্লকের ভূপতিনগর থানার অর্জুন নগর গ্রাম পঞ্চায়েতের নায়ড়াবিলা গ্রামে রাত প্রায় ১১টা নাগাদ ভয়াবহ বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। সেই ঘটনায় তৃণমূলের বুথ সভাপতি রাজকুমার মান্না, তাঁর ভাই দেবকুমার মান্না ও বিশ্বজিৎ গায়েনের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে এলাকায় যায় পুলিশ। স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরে আদালতের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় এনআইএ। আদালতের নির্দেশে সেই বিস্ফোরণের ঘটনার তদন্ত করতে গিয়েই হামলার মুখে পড়ল এনআইএ।

সূত্রের খবর, বিস্ফোরণের ঘটনায় ভূপতিনগরের বাসিন্দা বলাই মাইতি এবং মনোব্রত জানা নামে দুই ব্যক্তিকে তলব করেছিল এনআইএ। কিন্তু তাঁরা নির্ধারিত দিনে হাজিরা দেননি। স্থানীয় সূত্রে খবর, মনোব্রত এবং বলাইয়ের খোঁজে অভিযান চালায় এনআইএ। দু’জনকে গাড়িতে তুলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়ার সময় কেন্দ্রীয় এজেন্সির গাড়ি ঘিরে ধরেন উত্তেজিত গ্রামবাসীরা। তাঁরা বলাই এবং মনোব্রতকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবি করতে থাকেন বলে সূত্রের দাবি। এর পরেই এনআইএর গাড়ির কাচ ভেঙে দেওয়া হয়। দুই এনআইএ আধিকারিক আহত হয়েছেন বলেও জানা গিয়েছে। আক্রান্ত হওয়ার পর এনআইএ যায় থানায়। এনআইএর তরফে লিখিত অভিযোগের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

প্রসঙ্গত, গত ৫ জানুয়ারি কার্যত একই ভাবে হামলার মুখে পড়েছিল ইডি। সে বার ইডির গন্তব্য ছিল সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রাম। যেখানে ‘সন্দেশখালির বাঘ’ শাহজাহান থাকতেন। কিন্তু সাতসকালে গিয়ে শাহজাহানের অনুগামীদের হামলার মুখে পড়েন ইডির আধিকারিকেরা। ইডিকে নিরাপত্তা দিতে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকে, তাদেরও কার্যত প্রাণ বাঁচিয়ে পালাতে হয়। একাধিক ইডি আধিকারিক আহত হন। কলকাতায় এনে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়। সে দিন থেকেই উত্তাপ বৃদ্ধি পাচ্ছিল সন্দেশখালির। ফেব্রুয়ারির গোড়ায় এলাকার তৃণমূল নেতাদের ‘অত্যাচারের’ বিরুদ্ধে পথে নামেন সন্দেশখালির মহিলারা। একে একে গ্রেফতার হন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতারা। রাজ্য পুলিশ মিনাখাঁ থেকে গ্রেফতার করে শাহজাহানকে। সেই ঘটনায় মহিলাদের আন্দোলনের প্রথম সারিতে থাকা স্থানীয় মহিলা রেখা পাত্রকে এ বারের লোকসভা ভোটে বসিরহাট কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিজেপি। অন্য দিকে, সন্দেশখালিকাণ্ডে প্রথমে গ্রেফতার, পরে হাই কোর্টে জামিন পাওয়া নিরাপদ সর্দারকে বসিরহাটের প্রার্থী করেছে সিপিএম। সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার পূর্ব মেদিনীপুরে আক্রান্ত হল এনআইএ।

আরও পড়ুন
Advertisement