এনডিআরএফ পৌঁছল দিঘায়। — ফাইল চিত্র।
শেষ পর্যন্ত কি ধেয়ে আসবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা'! মে মাসে ফের ঘূর্ণিঝড়ের অশনি সংকেত। উপকূলে কি আবার আছড়ে পড়তে চলেছে প্রকৃতির রুদ্র রোষ! চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সেই সঙ্গে ঘুরপাক খাচ্ছে নানা জল্পনা।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, বুধবার সন্ধ্যে নাগাদ বঙ্গোপসাগরে ঘনিয়ে ওঠা দুর্যোগ সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। তবে এ দিন দিনভরই চড়া রোদে তপ্ত ছিল সৈকত শহর।তাপপ্রবাহ দেখা গিয়েছে গোটা জেলাতেই। তবে এর মধ্যেও দিঘায় পর্যটকের খামতি নেই। যদিও তা নগণ্য বলাই যায়। মন্দারমণিতেও পর্যটকের সংখ্যা ছিল কম। সমুদ্র মোটামুটি শান্ত ছিল। তীব্র গরম উপেক্ষা করে অনেককেই সমুদ্রে স্নান করতে দেখা গিয়েছে। তবে জোয়ারের আগে তাদের সমুদ্র থেকে উঠে যাওয়ার জন্য লাগাতার প্রচার চালিয়েছেন নুলিয়া এবং সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। সৈকতেক ধারে বিভিন্ন ওয়াচ টাওয়ার থেকেও চলেছে পুলিশের নজরদারি।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় রীতিমত কোমর বেঁধে নেমে পড়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। বুধবার সকালেই জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তিনটি দল পৌঁছেছে জেলায়। খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এ দিন বিকেলে জেলার ২৫টি ব্লকের বিডিওদের নিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম প্রস্তুতি সংক্রান্ত জরুরি বৈঠক করেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী। প্রতিটি ব্লকের সর্বশেষ পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেন।
প্রশাসন সূত্রে খবর, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলার তিনটি বাহিনীর মধ্যে দুটি বাহিনী রামনগরে একটি বাহিনী হলদিয়ায় রয়েছে। রামনগরে বাহিনীর একটি দল দিঘায় ও আরেকটি মন্দারমণিতে রাখা হচ্ছে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের মূল প্রশাসনিক ভবনে খোলা হয়েছে জেলা পর্যায়ের কন্ট্রোল রুম। এছাড়াও ২৫টি ব্লক এবং ২২৩টি পঞ্চায়েতে কন্ট্রোল রুম চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিন দিঘা, মন্দারমণি, কাঁথি এলাকায় পুলিশের তরফে মাইক প্রচার করা হয়। সমুদ্রে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে। তবুও বিভিন্ন এলাকায় অল্প সংখ্যক নৌকা সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছে। তারা যাতে বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে ফিরে আসে, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে।
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজী বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতি অনুযায়ী সমস্ত পরিস্থিতির উপর আমরা নজর রেখেছি। ঘূর্ণিঝড় কেটে যাওয়ার পর উদ্ধার কাজ কী ভাবে হবে তার রূপরেখাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। সমস্ত ব্লককে সতর্ক করা হয়েছে। থোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। এনডিআরএফ-এর তিনটি টিমও পৌঁছে গিয়েছে জেলায়।’’