নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
১০০ দিনের কাজের বকেয়া টাকা সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানে চালু হওয়া তৃণমূলের সহায়তা কেন্দ্রে হামলা চালাল একদল লোক। ভেঙে দেওয়া হয়েছে অস্থায়ী শিবিরের চেয়ার-টেবিল। সোমবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রামের ওই ঘটনা ঘিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক শোরগোল। এ নিয়ে সমাজমাধ্যমে লেখেন ‘‘দিল্লির জমিদাররা এবং তাদের চাটুকারেরা বাংলার মানুষকে চিরকালের বঞ্চনার মধ্যে রাখতে অনড়। এই জমিদারদের বিরুদ্ধে ১০ বছরের ক্রমাগত অন্যায়, যন্ত্রণা এবং আমাদের যা সঠিক তা আটকে রাখার পাঠ শেখানোর সময় এসেছে।’’
তৃণমূলের তরফে কুণাল ঘোষের অভিযোগ, বিজেপির লোকজন ওই হামলায় অভিযুক্ত। সোমবার নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের তেখালিবাজার এলাকায় ওই ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, তাঁরা বিজেপির কর্মী।
The ZAMINDARS from Delhi and their MINIONS are adamant on keeping the people of Bengal in perpetual deprivation. It's about time WE teach these ZAMINDARS a lesson for causing 10 YEARS of CONTINUOUS INJUSTICE, PAIN and WITHHOLDING what's RIGHTFULLY OURS. https://t.co/vomI1T4eMT
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) February 19, 2024
স্থানীয় সূত্রে খবর, আগাম ঘোষণা অনুযায়ী, সোমবার বেলার দিকে নন্দীগ্রামের তেখালি বাজারে সহায়তা কেন্দ্র শুরু করে তৃণমূল। ১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে যাঁরা সমস্যায় রয়েছেন, তাঁরা ওই সহায়তা কেন্দ্রে এসে আবেদন জানাতে পারেন। রাজ্যের সর্বত্রই এই সহায়তা কেন্দ্র কাজ করছে। নন্দীগ্রামেও ওই সহায়তা কেন্দ্র চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড় জমিয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। অভিযোগ, দুপুরে সহায়তা কেন্দ্রে প্রচণ্ড ভিড়ের সময় এলাকার কয়েক জন যুবক গিয়ে নির্দেশের সুরে বলেন, ‘‘ক্যাম্প বন্ধ রতে হবে।’’ এ নিয়ে বেশ কিছু ক্ষণ তর্কাতর্কি চলে। তার মধ্যে উত্তেজিত কয়েক জন যুবক সহায়তা শিবিরে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ।
এর আগে রবিবার তৃণমূলের সহায়তা কেন্দ্র সম্পর্কিত প্রচার গাড়ি আটকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল নন্দীগ্রামে। গোকুলনগরের পাশের পঞ্চায়েত এলাকা মহেশপুরে প্রচার গাড়িতে হামলার অভিযোগ ঘিরেও উত্তেজনা ছড়ায়। বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন তৃণমূল এবং বিজেপি নেতৃত্ব। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পাশাপাশি, ওই প্রচার গাড়িটিকে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সোমবারের ঘটনা নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ অভিযোগ করেন, ওই হামলার ঘটনায় বিজেপি জড়িত। তিনি বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজের টাকার জন্য তৃণমূলের সহায়তা শিবিরে বিজেপির হামলায় মহিলাকর্মী-সহ তিন জন নিগৃহীত।’’ অন্য দিকে, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য সুদীপ দাসের দাবি, “উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চলাকালীন মাইকে প্রচার চালানো হচ্ছিল। গোকুলনগরে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রের পাশেই লোকজন জড়ো করে ক্যাম্প চালানো হচ্ছে। এরই প্রতিবাদ জানিয়ে এলাকার বাসিন্দারা ক্যাম্পটিকে বন্ধ করার আবেদন জানান। কিন্তু পুলিশ এলাকাবাসীদের অভিযোগ না শুনেই বিজেপির দুই কার্যকর্তাকে গ্রেফতার করেছে। এর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে।” যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল। শাসকদলের নেতা বাপ্পাদিত্য গর্গের অভিযোগ, “গত দু’ বছর ধরে ১০০ দিনের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন রাজ্য সরকার সেই বকেয়া টাকা মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এ জন্যই এলাকার মানুষদের সহায়তার জন্য রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের সহায়তা কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কিন্তু ওই টাকা আটকাতেও মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিজেপির লোকজন। এই কারণেই রবিবার প্রচারগাড়ি আটকে দেওয়া হয়েছিল। আর সোমবার মিথ্যে অভিযোগ তুলে ক্যাম্পে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।”