ত্রিস্রোতা রিসর্ট। নিজস্ব চিত্র।
শিল্পশহরের পাশেই বয়ে গিয়েছে তিন নদী— হুগলি, রূপনারায়ণ, হলদি। এই তিন নদ-নদীর সঙ্গমস্থলে রয়েছে গেঁওখালি। নদী তীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেছে হামেশাই ভিড় করেন পর্যটকেরা। শীতের মরশুমে বসে বনভোজনের আসর। পর্যটকদের কথা ভেবে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের তরফে সম্প্রতি গেঁওখালিতে ‘ত্রিস্রোতা’ ভবন বানানো হয়েছে। সেখানে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে পারবেন পর্যটকেরা।
গেঁওখালি পর্যটনের জন্য জনপ্রিয়। নদীর এক পাড়ে রয়েছে হাওড়া, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা। অন্যপাড়ে পূর্ব মেদিনীপুর। বাম আমলে এখানে একটি রিসোর্ট বানানো হয়েছিল। যার নাম ‘ত্রিবেণী সঙ্গম’। একেবারে নদীর তীরে থাকা এই রিসোর্টে রয়েছে আটটি ঘর। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের পরিচালনায় এই ত্রিবেণী সঙ্গমে বুকিং করা হয়। তবে বর্তমানে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছে। তাই নতুন তৈরি হয়েছে ত্রিস্রোতা রিসর্ট। ওই রিসোর্টে রয়েছে আরও ১১টি ঘর। যার প্রতিদিনের ভাড়া দু’হাজার টাকা। রিসর্টের বারান্দায় বসে উপভোগ করা যায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
সম্প্রতি গেঁওখালিতে এসে নতুন এই রিসর্টে সপরিবারে থেকেছিলেন জনপ্রিয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়। ঘুরে গিয়েছেন মহিষাদল রাজবাড়িও। সামজমাধ্যমে সেই ছবি আপলোড করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন লেখিকা। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ সূত্রের খবর, চাহিদা বাড়ছিল বলেই এই নতুন ঠিকানা তৈরি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গেঁওখালিতে বেশ কয়েকটি পার্কও রয়েছে। ওই সব পার্কেরও ভোল বদলে দেওয়া হয়েছে। শীতের মরসুমে গোলাপ বাগানে বিশেষ আকর্ষণ হবে।’’ আর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান জ্যোতির্ময় কর বলছেন, ‘‘গেঁওখালি পর্যটন কেন্দ্রকে পরিবেশ বান্ধব কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলা হচ্ছে। গ্রিন জ়োন করা হচ্ছে ওই এলাকা। নতুন করে সাজানো হচ্ছে পার্ক। আমরা সৌর বিদ্যুৎ দিয়েই ত্রিস্রোতা পরিচালনা করব। পর্যটকেরা আসলেও ওই আবাস আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও উদ্বোধন হয়নি।’’
গেঁওখালির অদূরেই রয়েছে মহিষাদল রাজবাড়ি। মাত্র সাত কিলোমিটার দূরে ওই রাজবাড়িও দেখার আকর্ষণ থাকছে পর্যটকদের কাছে। পর্যটকদের জন্য রাজবাড়িতেও উন্নয়নের কাজ চলছে। রাজবাড়িতে নতুন করে গোপাল জিউ মন্দিরে নহবত বাজা শুরু হয়েছে। প্রায় ২৫০ বছরের প্রাচীন এই মন্দিরের নহবত খানা ভেঙে গিয়েছিল। সম্প্রতি সেটিও নতুন করে সারানো হয়েছে। রাজপরিবারের সদস্য রুদ্রপ্রসাদ গর্গ বলেন, ‘‘প্রাচীন ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ভোরে এই নহবত বাজে। আগে আহির ভৈরব রাগ বাজানো হত। গত ৯ ডিসেম্বর থেকে এখনও তা ফের শুরু হয়ে।’’ রাজ পরিবারের সদস্যদের অভিমত, এই নহবতের আকর্ষণেও পর্যটকেরা আসবেন।