উত্তাল দিঘার সমুদ্র। নিজস্ব চিত্র।
গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে গভীর নিম্নচাপের জেরে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে চলছে বৃষ্টি। মঙ্গলবার রাত থেকেই পূর্ব মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। যার জেরে নিচু এলাকাগুলি ইতিমধ্যেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। বৃষ্টি এবং জল জমার জেরে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়লেও দিঘা-সহ উপকূল এলাকায় বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলেই জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসন সূত্রে।
বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এই নিম্নচাপের কেন্দ্রবিন্দু রয়েছে হলদিয়ায়। সেখানেই জেলার মধ্যে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় শুধু হলদিয়াতেই বৃষ্টি হয়েছে ২১৬ মিলিমিটার (মিমি)। হলদিয়ার থেকে কম হলেও কাঁথি এবং দিঘাতেও ভারী বৃষ্টি হয়েছে। কাঁথিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ১০৩ মিমি। উপকূলবর্তী এলাকায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আগেই দিয়েছিল আবহাওয়া দফতর। সে জন্য আগাম প্রস্তুতি ছিল প্রশাসনেরও। উপকূল এলাকায় আগে থেকেই জারি ছিল সতর্কতা। দিঘায় সমুদ্রে নামতে দেওয়া হচ্ছে না কাউকে। পর্যটকদের ভিড় এড়াতে হোটেলগুলি খালি করার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল জেলা প্রশাসনের তরফে। কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে গত সপ্তাহে প্লাবিত হয়েছিল ভগবানপুর, এগরা, পটাশপুর ও চণ্ডীপুরে বেশ কয়েকটি এলাকা। মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টির জেরে ওই এলাকার মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে।
রামনগর এক ব্লকের সভাপতি শম্পা মহাপাত্র বলেন, ‘‘মঙ্গলবার রাত ৩টে পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় নজরদারি চালানো হয়েছে। রাতভর বৃষ্টি চললেও ইয়াসের মতো পরিস্থিতি হয়নি। নিচু এলাকায় বৃষ্টির জল জমেছে। তবে বৃষ্টি থামলে তা নিকাশির মাধ্যমে বেরিয়ে যাবে।’’ তিনি আরও বলেছেন, ‘‘কোনও রকম বিপর্যয়ের আভাস পেলেই সৈকত এলাকাকে দ্রুত খালি করে দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া আছে। তবে এখনও পর্যন্ত আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’’ আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার সারা দিনই মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় চলবে বৃষ্টি। ঝোড়ো হাওয়ার জেরে দিঘার সমুদ্রও রয়েছে উত্তাল।
মঙ্গলবার রাত থেকে টানা বৃষ্টির জেরে দিঘা থানার পদিমা এক নম্বর পঞ্চায়েতের বিলাআড়িয়া এলাকায় একটি মাটির বাড়ি ভেঙে জখম হন এক দম্পতি। বিমল শিট (৩৫) এবং শঙ্করী শিট (৩০) নামে আহত দু’জনকে প্রথমে দিঘা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়।