মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারই পৌঁছে গিয়েছেন দিঘায়। পূর্ব মেদিনীপুরে তিন দিনের সফর তাঁর। বেশ কিছু কর্মসূচি থাকলেও এই সফরে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উদ্দেশ্য দিঘার নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শন করা। তার পর একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করতে পারেন তিনি।
মঙ্গলবার দুপুরে মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টার নামে দিঘা হেলিপ্যাড ময়দানে। সেখানে তাঁকে দেখতে ভিড় করেছিলেন অনেকে। তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উৎসাহ ছিল তুঙ্গে। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে এসেছিলেন কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি পীযূষ পণ্ডা। ছিলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অখিল গিরির পুত্র সুপ্রকাশ গিরি। হেলিকপ্টার থেকে নেমেই মমতা সোজা চলে যান জনতার কাছে। তাঁদের সঙ্গে হাত মেলান, কথা বলেন। তার পর সেখান থেকে সোজা চলে আসেন ওল্ড দিঘার অথিতিশালায়।
মুখ্যমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে আঁটসাঁট নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে দিঘায়। দিঘা গেট থেকে সৈকত পর্যন্ত রাস্তা ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা হয়েছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে সমুদ্রসৈকত। বুধবার সকালে অতিথিশালা থেকে মুখ্যমন্ত্রী যাবেন নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনে। মন্দিরের কাজ কত দূর এগিয়েছে, কতটা বাকি— সে সবই খতিয়ে দেখবেন। মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মন্দিরে ট্রাস্টি বোর্ড গঠনের সম্ভাবনা রয়েছে। জেলার বিধায়কদের সঙ্গে একটি প্রশাসনিক বৈঠকও করার কথা আছে তাঁর। তবে এ ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি। আগামী বৃহস্পতিবার তাঁর কলকাতায় ফেরার কথা।
শুধু প্রশাসনিক কাজ নয়, তৃণমূল সূত্রে খবর, দিঘা সফরে গিয়ে জেলায় দলের সাংগঠনিক বিষয়েও খোঁজখবর নিতে পারেন মমতা। সোমবারই সে বিষয়ে জেলার বিধায়কদের সঙ্গে তাঁর একপ্রস্ত কথা হয়েছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর এলাকায় কাঁথি সমবায় ব্যাঙ্কের নির্বাচন রয়েছে। এ বার সেই ভোট কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে করানোর নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ওই সমবায় ভোটে দলীয় প্রার্থীদের জেতাতে দ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াইয়ের বার্তা দিয়েছেন দলনেত্রী।
দ্বিতীয় বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে ২০১৮ সালে পুরীর সমান উচ্চতার জগন্নাথ মন্দির দিঘায় তৈরির কথা ঘোষণা করেন মমতা। ওল্ড দিঘায় প্রস্তাবিত জগন্নাথদেবের মাসির বাড়িতেই গোড়ায় জগন্নাথ মন্দির নির্মাণের ভাবনাচিন্তা করেছিল রাজ্য সরকার। পরে নিউ দিঘা স্টেশনের ধারে ভোগীবহ্মপুর মৌজায় মন্দির নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ২০২২ সালের অক্ষয় তৃতীয়ায় ২৫ একর জমিতে জগন্নাথধাম ও সংস্কৃতি কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়। রাজ্য সরকারের তরফে নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে হিডকোকে। খরচ হচ্ছে ১৮০ কোটি টাকা।