Left Brigade Rally

অত টাকা নেই! গনগনে গরমে ব্রিগেডে ছাউনির কথা ভেবেও পিছোল সিপিএম, চার উপায়ে মাঠ ভর্তি করার চেষ্টায় নেতৃত্ব

গরমে অস্থায়ী ছাউনি (হ্যাঙার) টাঙিয়ে সভা করা নতুন নয়। অতীতে তৃণমূল এবং বিজেপি তা করে দেখিয়েছে। সিপিএমও রোদ থেকে কর্মীদের বাঁচাতে হ্যাঙারের কথা ভেবেছিল। কিন্তু কৃষক নেতৃত্ব বলছেন, টাকার অঙ্ক শুনে পিছিয়ে আসতে হল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৫ ২০:৫৯
Mass organizations of CPM will hold a brigade rally on April 20 under the sky in the heat of summer

ছবি: ফেসবুক।

মার্চের ২৭ তারিখ অর্থাৎ গত বৃহস্পতিবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার তা সামান্য হলেও বেড়েছে। বোঝাই যাচ্ছে, আবহাওয়ার বড় কোনও বদল না-ঘটলে এপ্রিলের ২০ তারিখ কলকাতা শহরের তাপমাত্রা চল্লিশের ঘরে চলে যাবে। ওই দিন ব্রিগেডে সমাবেশ ডেকেছে সিপিএমের শ্রমিক, কৃষক, ক্ষেতমজুর এবং বস্তি সংগঠন। রোদের হাত থেকে রেহাই পেতে ব্রিগেডে বিশেষ ব্যবস্থার কথা ভেবেছিলেন সিপিএমের শ্রমিক-কৃষক নেতৃত্ব। কিন্তু ভেবেও তা থেকে পিছিয়ে আসতে হচ্ছে তাঁদের। কারণ, অর্থ।

Advertisement

গরমে অস্থায়ী ছাউনি (হ্যাঙার) টাঙিয়ে সভা করা বাংলায় নতুন নয়। গত কয়েকটি ভোটে তৃণমূল এবং বিজেপি তা করে দেখিয়েছে। সিপিএমও রোদ থেকে কর্মীদের বাঁচাতে হ্যাঙারের কথাই ভেবেছিল। কিন্তু কৃষক নেতৃত্ব বলছেন, খরচের অঙ্ক শুনে তাঁদের পিছিয়ে আসতে হয়েছে। প্রাদেশিক কৃষক সভার সম্পাদক অমল হালদারের কথায়, ‘‘আমরা কথা বলেছিলাম ছাউনির ব্যাপারে। কিন্তু যা ভাড়া, তাতে আমাদের পিছিয়ে আসা ছাড়া আর কোনও পথ নেই।’’ তবে ৫০ হাজার লাল টুপি তৈরি করাচ্ছে বামেরা। টুপি পরিহিতদেরই মাঠের মাঝখানে বসাবে তারা। যাতে মাঠ খালি না-দেখায়। তবে অমলের বিশ্বাস, ‘‘মাঠেঘাটে, কলেখারখানায় কাজ করারাই এ বারের ব্রিগেড ভরাবেন। তাঁদের রোদে অসুবিধা হবে না। তাঁরা অভ্যস্ত।’’

জেলা থেকে বাসে, ট্রেনে জমায়েতকারীদের আনার পরিকল্পনা করেছে সিপিএমের গণসংগঠনগুলি। প্রবীণ নেতা অমিয় পাত্র জানিয়েছেন, সবাইকে বলা হচ্ছে গামছা এবং জলের বোতল আনতে। ছাতা আনারও পরামর্শ রয়েছে। অর্থাৎ, জলের বোতল, গামছা, ছাতা এবং লাল টুপি— এই চার উপায়ে গরম থেকে কর্মীদের রক্ষা করে মাঠ ভরাতে চাইছেন বাম নেতৃত্ব। স্থানীয় স্তরের নেতৃত্বকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্লুকো়জ় রাখারও। এখন সিপিএমের যে কোনও কর্মসূচি হলেই ড্রোন উড়িয়ে ছবি তোলা হয়। মূলত সিপিএমের ডিজিটাল টিম এই কাজটি করে। বাম নেতৃত্ব সজাগ, যাতে মাঠের মাঝখানটা কোনও ভাবেই খালি না-থাকে। সে কারণেই সংগঠিত ভাবে লাল টুপিধারীদের মাঠে বসা নিশ্চিত করতে চাইছেন তাঁরা। ব্রিগেড সমাবেশের ঘোষিত সময় বেলা ৩টে। প্রথম এক ঘণ্টা সাংস্কৃতিক কর্মসূচি চললে বক্তৃতার পর্ব শুরু হতে হতে বিকেল ৪টে বেজে যাবে। যখন পড়ন্ত বিকেল। যদিও বৈশাখে বিকেল ৪টের রোদও কম জ্বালাপোড়ার নয়।

হ্যাঙার বা ছাউনির বন্দোবস্ত না-করার নেপথ্যে আরও একটি কারণ থাকতে পারে বলে অভিমত রয়েছে। যে অভিমত বলছে, খরচ সাপেক্ষ হ্যাঙারের বন্দোবস্ত না-করে মানুষের সামনে আসলে ‘গরিবের পার্টির’ ভাষ্য তুলে ধরার কৌশল নিয়েছে সিপিএম। সরকারে থাকার সময়ে অন্যদের মতো সিপিএমেরও অভাব ছিল না। তবে সরকার থেকে চলে যাওয়ার পরে বহু জেলাতেই সিপিএম সঙ্কটে পড়েছে। হুগলি, পূর্ব বর্ধমানের মতো বহু জেলায় একাধিক গাড়িও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হয়েছে দল। কোথাও কোথাও শুধুমাত্র আর্থিক সঙ্কটের কারণেই সর্ব ক্ষণের কর্মী (হোলটাইমার) নিয়োগ থমকে গিয়েছে মাঝেমধ্যেই। আবার এ-ও বাস্তব, এই ‘দুর্দিনেও’ সিপিএম নিউটাউনে জ্যোতি বসুর নামাঙ্কিত গবেষণাকেন্দ্র তৈরি করছে। সেই বাবদ অর্থ সংগ্রহও চলছে। সেই খরচও কম নয়। তবে ব্রিগেডে কোনও বৈভব দেখাতে চাইছেন না বামেরা। অনেকের বক্তব্য, আর্থিক সঙ্কটের বিষয়টি একেবারে অমূলক নয়। তবে তার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে ‘রাজনৈতিক সচেতনতা’ও।

Advertisement
আরও পড়ুন