উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: স্বরূপ সরকার
বেসরকারি নার্সিংহোম এবং হাসপাতালগুলি যাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড নেয়, সে জন্য চাপ বাড়াতে বার্তা দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, সরকারি নির্দেশ অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিলের নিয়মও রয়েছে। স্বাস্থ্যমহল থেকে মনে করা হচ্ছে, এই ভাবে ঘুরিয়ে কড়া পদক্ষেপ করারই ইঙ্গিত দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে ‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডে’র ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রেও যাতে বাধার মুখে না পড়তে হয়, সে জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে বলেন মুখ্যসচিব এবং স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবকে।
মুখ্যমন্ত্রী ওই বৈঠকে বলেন, ‘‘অনেক নার্সিংহোম স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড অবহেলা করছে। সরকারি প্রকল্পকে মান্যতা দিতেই হবে। না হলে তো তাদের লাইসেন্স বাতিল হতে পারে।’’ কোভিড পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডে চিকিৎসা করাতে গিয়ে কলকাতা-সহ বিভিন্ন জেলার অনেক নার্সিংহোম থেকে অনেককে ফিরে যেতে হয়েছে বলে অভিযোগ। তাতে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের সুবিধা নিয়ে প্রশ্ন তোলে বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরও।
পাশাপাশি, ‘স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ডের’ সুবিধা পেতে ব্যাঙ্ক বা সরকারের তরফে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা দেখে নিতে বলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীকে। স্কুল শিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব মণীশ জৈনের কাছে জানতে চান বিস্তারিত। মণীশ বলেন, ‘‘সমস্ত ব্যাঙ্কের কাছে যাওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে স্টেট ও সেন্ট্রাল কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক ঋণ দিতে শুরু করে। আরও দু’টি ব্যাঙ্ক পুজোর আগে চুক্তি করেছে। মাঝখানে মুখ্যসচিব চার বার ব্যাঙ্কের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাতে দু’টো বেসরকারি ব্যাঙ্ক এগিয়ে এসেছে। যে দু’টো ব্যাঙ্কে সমস্যা হচ্ছে তারা নভেম্বর থেকে শুরু করবে বলে আশাবাদী।’’
আধিকারিকেরা জানান, অনেক ব্যাঙ্ক কিছু করেনি। আবেদন পড়ে রয়েছে দুই তিন মাস ধরে। সে সব অন্য ব্যাঙ্কে নেওয়া হয়েছে। পুজোর পরে নতুন করে অনুমোদন শুরু হয়েছে। জোর দেওয়া হচ্ছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির পড়ুয়াদের থেকে ১ লক্ষের বেশি আবেদন জমা পড়েছে। ৪ কোটি টাকার বেশি চাহিদা রয়েছে। যে ব্যাঙ্কগুলি এখন কাজ করছে, তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে আবেদনগুলি। ৩৪ হাজার আবেদন অনুমোদন করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, প্রতি দিন এক বার দেখে নিতে কতগুলি আবেদন আটকে রয়েছে। কেন আটকে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘আমি চাই পড়ুয়ারা এই সুবিধা পাক। তাতে ব্যাঙ্কেরও ভাল হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘লক্ষ্ণীর ভান্ডারে আবেদন করতে পারেনি অনেকে। স্বাস্থ্যসাথী কার্ড না থাকলে সেই সুবিধা কেউ পাবেন না, এটা ভুল। অন্য নথি ঠিক থাকলে তাঁরাও পাবেন।’’