Mamata Banerjee

‘পাশে থাকা’র প্রশ্নে রাজ্যের শিল্পপতিদের একাংশের ভূমিকায় ক্ষুণ্ণ মমতা, উষ্মা প্রকাশ

মুখ্যমন্ত্রী বৈঠকে বলেন, তিনি সর্বদা রাজ্যের শিল্পপতিদের পাশে থাকেন এবং তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলার চেষ্টা করেন। তবু তাঁর ‘প্রয়োজনের সময়ে’ এই শিল্পপতিরা উপযুক্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন না।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০২৪ ০৭:২৯
Mamata Banerjee.

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

‘পাশে থাকা’র প্রশ্নে রাজ্যের শিল্পপতিদের একাংশের ভূমিকায় ‘কিঞ্চিৎ ক্ষুণ্ণ’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার শিল্প মহলের প্রতিনিধিদের নিয়ে হওয়া বৈঠকে তাঁর সেই মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement

বৈঠকটি ছিল রূদ্ধদ্বার। তবে সূত্রের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী সেখানে বলেন, তিনি সর্বদা রাজ্যের শিল্পপতিদের পাশে থাকেন এবং তাঁদের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলার চেষ্টা করেন। তবু তাঁর ‘প্রয়োজনের সময়ে’ এই শিল্পপতিরা তাঁদের প্রতি উপযুক্ত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন না। পর্যবেক্ষকদের অনেকের ধারণা, মুখ্যমন্ত্রীর এই অভিমতের লক্ষ্য সেই সব শিল্পপতি, যাঁরা আদতে ভিন্ রাজ্যের হলেও ব্যবসায়িক সূত্রে বাংলার বাসিন্দা।

অন্য দিকে চলতি বছরের শেষের পরিবর্তে আগামী বছর ফের বিশ্ববাংলা শিল্প সম্মেলনের (বিজিবিএস) আসর বসবে। বিকল্পে ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পর্যন্ত ‘শোকেস ওয়েস্ট বেঙ্গল’ কর্মসূচি পালিত হবে।

এ দিনের বৈঠকে হর্ষ নেওটিয়া, রুদ্র চট্টোপাধ্যায়, সুশীল মোহতা, সঞ্জয় বুধিয়া-সহ অনেকেই হাজির ছিলেন। ছিলেন মন্ত্রিসভার সদস্য ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা প্রমুখ।

অতীতে একাধিক বার শিল্পপতিদের বাড়ি-কার্যালয়ে আয়কর, সিবিআই বা ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার হানা নিয়ে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে শিল্পপতিদের উপরে ‘চাপ সৃষ্টি’ করার অভিযোগে সর্বভারতীয় স্তরে সরব হয়েছিলেন তিনি। এমনকি, কেন্দ্রের সেই সব পদক্ষেপের কারণে শিল্পপতিরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেছিলেন। সংশ্লিষ্ট মহল তাই মনে করছে, আন্তরিকতা বা পাশে থাকার প্রশ্নে মমতা যে ভাবে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছিলেন, তাতে তাঁর এ দিনের মনোভাব নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

যদিও এ দিনের বৈঠকে সরকারের তরফে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মমতা। বিনিয়োগ বা শিল্পায়নের সামনে কোনও বাধা যাতে না থাকে, তা নিশ্চিত করার বার্তাও দিয়েছেন। বিনিয়োগকারীদের কাউকে বিরক্ত বা হেনস্থা করা হলে প্রশাসন যে কোনও-ভাবে তা রেয়াত করবে না, তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা। এ দিন ফের তিনি দাবি করেন, শিল্পায়নের প্রশ্নে জমি বাধা হবে না। পরিকাঠামো থেকে বাণিজ্য-ব্যবস্থা—সবই প্রস্তুত রয়েছে। শিল্পপতি বা বিনিয়োগকারীরা সমস্যা সমাধানের আশায় প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে, তাঁদের সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার নির্দেশও মুখ্যসচিবকে দেন মমতা।

এ দিনের বৈঠকে স্থির হয়েছে, ‘শোকেস ওয়েস্ট বেঙ্গল’ কর্মসূচিতে রাজ্যের হস্তশিল্প, তাঁতসামগ্রী, খাবারের সম্ভার, স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদন—সবই আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরবে রাজ্য। পাশাপাশি, রাজ্যে প্রস্তাবিত আর্থিক করিডরগুলি দ্রুত তৈরির বার্তাও দিয়েছেন মমতা।

প্রশাসনের আধিকারিক মহলের একাংশের কথায়, এত দিন ধরে যে বিজিবিএসগুলি হয়েছে, তাতে কী বিনিয়োগ এসেছে এবং বাস্তবায়িত হয়েছে, তা নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশের প্রস্তুতি (হরি কৃষ্ণ দ্বিবেদী মুখ্যসচিব থাকাকালীনই) নিয়েছিল রাজ্য। সেটি কবে প্রকাশ পাবে, এখনও স্পষ্ট নয়।

Advertisement
আরও পড়ুন