মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আরজি করের ধর্ষণ-খুন মামলায় দোষী সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা শুনিয়েছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। তা শুনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনি এখনও ফাঁসির দাবিতে অনড়। যাবজ্জীবন না হয়ে ফাঁসির সাজা হলে মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতেন বলে আক্ষেপ করলেন তিনি। একই সঙ্গে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে পরোক্ষে প্রশ্ন তুললেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।
জেলা সফরে সোমবার মালদহে পৌঁছন মমতা। হেলিকপ্টার থেকে নামতেই আরজি কর মামলা নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। সেই প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্টতই জানিয়ে দেন, আরজি করের রায়ে খুশি নন তিনি। নিজের মত জানাতে গিয়ে মমতা টেনে এনেছেন জয়নগর, ফরাক্কা এবং গুড়াপের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা। বস্তুত, তিনটি ক্ষেত্রেই তদন্ত করেছে পুলিশ। পুলিশের দেওয়া চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচার করে নিম্ন আদালত ফাঁসির সাজা শুনিয়েছে। মমতা বলেন, ‘‘তিনটি কেসেই আমরা ফাঁসির সাজা করিয়ে দিয়েছি। এটা (আরজি কর মামলা) খুব গম্ভীর বিষয়।’’
বিচারকের রায় নিয়ে কিছু না বললেও আদালতে সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের হাতে এই মামলা থাকলে, আমরা অনেক আগেই ফাঁসির রায় করিয়ে দিতে পারতাম।’’ তার পরই সিবিআইয়ের ভূমিকা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমি জানি না, কী ভাবে লড়াই করেছে, কী যুক্তি দিয়েছে। সবটাই সিবিআই করেছে। আমাদের হাত থেকে মামলাটা ইচ্ছা করে কেড়ে নিয়ে চলে গেল।’’ তবে তার পরও তিনি যে সিবিআইয়ের উপর আস্থা রেখেছিলেন তার ইঙ্গিত দেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম নরপিশাচদের, চরমতম শাস্তি হোক!’’ সিবিআইয়ের তদন্ত নিয়ে কিছু বলতে চাননি মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমি সন্তুষ্ট নই। ফাঁসির সাজা হলে অন্তত মনকে সান্ত্বনা দিতে পারতাম।’’
সোমবারই জেলা সফর শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রথমে তিনি মুর্শিদাবাদে যান। সেখানে সরকারি কর্মসূচি সেরে মালদহের উদ্দেশে উড়ে যান। মুর্শিদাবাদে যাওয়ার আগে ডুমুরজলা হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, ফাঁসির দাবিতে তিনিও পথে নেমেছিলেন। মিছিলে হেঁটেছেন। তিনিও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। তিনি যখন এই কথা বলেন, তখনও বিচারক আরজি কর মামলায় সাজা ঘোষণা করেননি। তবে সাজা ঘোষণার পর মমতা তাঁর প্রথম প্রতিক্রিয়ায় নিজের অসন্তোষের কথা জানিয়ে দেন।