‘ডেনা’র প্রভাবে চলছে দুর্যোগ। শুক্রবার ভোরে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। —নিজস্ব চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ স্থলভাগে ঢুকতে শুরু করেছিল ঘূর্ণিঝড়। সারা রাত ধরে সেই প্রক্রিয়া চলে। শুক্রবার ভোরে স্থলভাগ অতিক্রম করেছে ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজ’, অর্থাৎ শেষ অংশ। ‘ল্যান্ডফল’ চলাকালীন ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলে ঝড়ের সর্বোচ্চ গতি ছিল ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। তবে সকালে ‘ল্যান্ডফল’ শেষ হওয়ার পর গতি কিছুটা কমেছে। বর্তমানে উপকূল এলাকায় ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১০০ কিলোমিটার বেগে ঝড় বইছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দফতর। শক্তি হারিয়ে তা এখন ‘সাধারণ’ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। বিকেলের মধ্যে আরও কিছুটা শক্তিক্ষয় করে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে ‘ডেনা’।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ওড়িশার ভুবনেশ্বরের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে হলদিয়ায়। ভুবনেশ্বরে ওই সময়ের মধ্যে ২০.৪ মিলিমিটার। হলদিয়ায় হয়েছে ৬৩ মিলিমিটার। ওই সময়ের মধ্যে ওড়িশার বালেশ্বরে ৪৮ মিলিমিটার, পারাদ্বীপে ৭৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ওড়িশার চাঁদবালিতে। সেখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১৪৫ মিলিমিটার।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’ উত্তর ওড়িশা হয়ে ক্রমশ উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর। ধীরে ধীরে শক্তিও কমবে তার। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ থেকে ‘সাধারণ ঘূর্ণিঝড়ে’ পরিণত হতে পারে ‘ডেনা’।
স্থলভাগে ঢুকল ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র ‘লেজের অংশ’। মৌসম ভবনের তরফে আগেই জানানো হয়েছিল, এই ঘূর্ণিঝড়ের কোনও ‘চোখ’ থাকবে না। সমুদ্রের উপর থেকে ঘূর্ণিঝড় ঘুরতে ঘুরতে যখন স্থলভাগের দিকে এগোয়, তখন তার কেন্দ্রে একটি আপাত শান্ত অঞ্চল তৈরি হয়। সেখানে হাওয়ার বেগ তুলনামূলক কম থাকে। ‘ল্যান্ডফলের’ সময় ঝড়ের ওই কেন্দ্র যখন স্থলভাগে প্রবেশ করে, তখন ঘূর্ণিঝড়ের দাপট হয় সবচেয়ে বেশি। আবহবিদদের মতে, অনেক ক্ষেত্রেই ‘চোখ’ তৈরি হয় না ঘূর্ণিঝড়ের। অন্য দিকে, ঘূর্ণিঝড়ের ‘লেজ’ বলতে বোঝায় ঘূর্ণিঝড়ের শেষের অংশ। এই অংশটি পুরোপুরি স্থলভাগে ঢুকলে ‘ল্যান্ডফল’ প্রক্রিয়া শেষ হবে।
স্থলভাগে এখনও ‘প্রবল ঘূর্ণিঝড়’ হিসাবে অবস্থান করছে ‘ডেনা’। বর্তমানে ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিমি। দমকা হাওয়ার গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিমি।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় ঘূর্ণিঝড়টি ওড়িশার ধামারা বন্দরের ৩০ কিলোমিটার উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে। ভিতরকণিকার হাবালিখাতি নেচার ক্যাম্পের ৫০ কিমি উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিম দিকে রয়েছে ‘ডেনা’। ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটার বেগে এগোচ্ছে ঘূর্ণিঝড়টি।
ঘূর্ণিঝড় ‘ডেনা’র স্থলভাগে আছড়ে পড়ার প্রক্রিয়া (ল্যান্ডফল) আরও এক ঘণ্টা চলবে বলে জানাল আলিপুর আবহাওয়া দফতর।