(বাঁ দিকে) আরজি করের ঘটনায় বিক্ষোভ। অভিযুক্ত ব্যক্তি (ডান দিকে)। ছবি: পিটিআই।
তাঁর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। আর কোনও দিন সম্পর্কও রাখতে চান না। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় আনন্দবাজার অনলাইনকে এমনই জানালেন অভিযুক্তের দিদি। শুধু তা-ই নয়, এই ঘটনায় তাঁর ভাইয়ের কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তির দাবিও জানিয়েছেন তিনি। সূত্রের খবর, অভিযুক্তের দিদি নিজেও এক জন পুলিশকর্মী।
শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের চার তলার সেমিনার হলে এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। সেই অভিযোগে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই অভিযুক্ত সিভিকের দিদিকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আরজি কর-কাণ্ডে তাঁর ভাইয়ের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে, সে প্রসঙ্গে তাঁর কি কোনও বক্তব্য আছে? এই কথা শুনেই একটু মেজাজ হারান তিনি। আর তাঁর কথার মধ্যেই ভাইয়ের প্রতি যে রাগ এবং ক্ষোভ রয়েছে সেটাও স্পষ্ট বোঝা গিয়েছে। প্রশ্ন শুনেই তিনি বলেন, “ওর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। ওর সঙ্গে কোনও রকম সম্পর্ক রাখতে চাই না। সরকার এবং প্রশাসন ওকে যা শাস্তি দেওয়ার দিক। কঠোর থেকে কঠোরতম শাস্তি যেন হয়।”
অনেক দিন ধরে ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নেই। ফলে ভাই সম্পর্কে তিনি বেশি কিছু বলতে পারবেন না বলেও দাবি করেন। তবে সম্পর্ক না রাখার কারণ হিসাবে অভিযুক্তের অতিরিক্ত মদ্যপানকেই কারণ হিসাবে দেখাতে চেয়েছেন আরজি করকাণ্ডের অভিযুক্তের দিদি। তাঁর ভাই কখন বাড়িতে আসতেন, কখন বেরিয়ে যেতেন, কী করতেন, কিছুই তিনি জানতেন না বলেও দাবি করেছেন। কেন সম্পর্ক নেই? এই প্রশ্ন করতেই অভিযুক্তের দিদি দাবি করেন, “ও খুব মদ খেত। তাই ওর সঙ্গে সম্পর্ক রাখিনি।” অভিযুক্ত কি বরাবরই এ রকম? এ প্রশ্ন শুনে তিনি বলেন, “হ্যাঁ, ও বরাবরই এ রকম। কখনও বাড়ি আসত, কখনও আসত না। কাউকে কিছু বলতও না। নিজের মর্জির মালিক ছিল।”
তবে বার বারই তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে, “ও আমার কেউ নয়। ওর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। তাই ওর সম্পর্কে আমি বিশেষ কিছু বলতে পারব না। যার সঙ্গে আমার সম্পর্ক নেই, সে আমার কে হবে!” অভিযুক্তের বিয়ে প্রসঙ্গেও প্রশ্ন করা হয়েছিল তাঁর দিদিকে। স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা গিয়েছিল, অভিযুক্তের পাঁচটি বিয়ে। কিন্তু এই প্রসঙ্গ উঠতেই তিনি এড়িয়ে গিয়ে আবারও বলেন, “ওর সঙ্গে আমার কোনও সম্পর্ক নেই। আমি কিছু বলতে পারব না। তবে যা করেছে, তার জন্য প্রশাসন যা শাস্তি দেওয়ার দিক।”
এই ঘটনায় তিনি অত্যন্ত অবাক হচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন অভিযুক্তের দিদি। তাঁর কথায়, “আমি সত্যিই অবাক হচ্ছি। এর জন্য আমি ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। কাঁপিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা। এ রকম মানুষ আমি দেখিনি। সরকার যদি ওকে কঠোর শাস্তিও দেয় আমার কিছু যাবে-আসবে না।” সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরির পর থেকেই অভিযুক্তের হাবভাব কি বদলে গিয়েছিল? এই প্রশ্ন করা হলে অভিযুক্তের দিদি বলেন, “ও অনেক দিন আগে থেকেই বদলে গিয়েছিল। যখন ওর হাবভাব বদলে যায়, তখন থেকেই ওর সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করি।”