আরজি কর হাসপাতাল। ফাইল চিত্র।
তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে চিকিৎসকেরা বার বারই সরব হয়েছেন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। শুক্রবার এক মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও বেআব্রু করে দিল। এই ঘটনায় যে ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তিনি হাসপাতালের কেউ নন বলে লালবাজার সূত্রে খবর। তিনি বহিরাগত। ফলে কী ভাবে এক জন বহিরাগত হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলায় উঠে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আর এই ঘটনাই আরজি করের নিরাপত্তাকে বড় প্রশ্নের মুখে এনে দাঁড় করাতে নড়েচড়ে বসেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ বার সেই খামতিগুলি চিহ্নিত করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পদক্ষেপ করার উদ্যোগ নিল আরজি কর। চিকিৎসকের মৃত্যুর পর হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবাদ জোরালো হতেই ঘটনার দিন দায়িত্বে থাকা দুই নিরাপত্তা কর্মীকে সরিয়ে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জানা গিয়েছে, হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে বাইরের একটি সংস্থা। সেই সংস্থাকেও সতর্ক করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, হাসপাতালের নিরাপত্তা জোরদার করতে এবং নজরদারি বাড়াতে ইতিমধ্যেই সিসিটিভি লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে। যে সব জায়গায় সিসিটিভি নেই, সেই জায়গাগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। পাশাপাশি, মহিলা চিকিৎসকদের জন্য পর্যাপ্ত শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের অনেক সময় টানা কাজ করতে হয়। ফলে কাজের ফাঁকে তাঁরা যে ডিউটি রুমে বসেন, সেই ঘরগুলিও মেরামত করে বসার যোগ্য করে তোলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালে আরজি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চার তলার হলঘর থেকে এক চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। সেই ঘটনায় ইতিমধ্যেই এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে যুবককে দেখা গিয়েছিল। ৩০ থেকে ৩৫ মিনিট পর আবার তাঁকে বেরিয়ে আসতেও দেখা যায়। এই সময়ের মধ্যেই তিনি ঘটনাটি ঘটিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ঘুমন্ত অবস্থায় চিকিৎসকের উপর হামলা, তার পর তাঁকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে সেটা খানিক স্পষ্ট বলেই তদন্তকারীদের একাংশের মত। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টও সে দিকেই ইঙ্গিত করছে। হামলা করার পর ওই যুবতী নিজেকে বাঁচানোর জন্য যতটা প্রতিরোধ করা স্বাভাবিক, তা করতে পারেননি বলেই তদন্তকারীদের সূত্রে খবর। কিন্তু কেন তিনি প্রতিরোধ করতে পারলেন না, সেই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।