Kolkata Metro Rail

ছাড়পত্র এলেও বকেয়া কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথে

পরিদর্শনের সময়ে সত্যজিৎ রায় স্টেশনে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ করেনি। আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বেরিয়ে আসার পথ এবং সাধারণ প্রস্থান-পথ আলাদা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৭:১৮
A Photograph of a Metro

এখনও একাধিক জরুরি কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। ফাইল ছবি।

শহরে নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পগুলিতে তড়িঘড়ি যাত্রী পরিষেবা শুরু করতে গিয়ে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে আপস করা হচ্ছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছিল আগেই। যা আরও জোরালো হয়ে উঠছে নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথের ক্ষেত্রে। কারণ, এই পথে আধুনিক সিগন্যালিং ব্যবস্থা এখনও তৈরি হয়নি। তারই মধ্যে একটি ট্রেনের মাধ্যমে যাত্রী পরিষেবা শুরু করার জন্য রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের ছাড়পত্র মিলেছে। সেই ছাড়পত্র এলেও এখনও একাধিক জরুরি কাজ সম্পূর্ণ করতে হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষকে। তিন মাসের মধ্যে তা জানাতে হবে রেলওয়ে সেফটি কমিশনারকে। কারণ, এই ছাড়পত্রের বৈধতা থাকবে ওই সময় পর্যন্তই।

সূত্রের খবর, রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের রিপোর্টে বলা হয়েছে, নিউ গড়িয়া-রুবি মেট্রোপথের কবি সুভাষ স্টেশনে ইন্টারলকিংয়ের কাজ শেষ হওয়া পর্যন্ত শুধু দু’নম্বর লাইন (নিউ গড়িয়া থেকে রুবির দিকে আসার সময়ে ডান দিকের লাইন) ব্যবহার করে পরিষেবা চালু রাখা যাবে। লাইনে ট্রেনের গতি হতে হবে ঘণ্টায় সর্বাধিক ৫০ কিলোমিটার, পয়েন্টের কাছে ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার। পরিষেবা শুরু করার আগে পাঁচটি স্টেশনেই ঢোকা-বেরোনোর পথ ছাড়াও আলো এবং ভেন্টিলেশনের কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে।

Advertisement

কমিশনার তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, পরিদর্শনের সময়ে সত্যজিৎ রায় স্টেশনে অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা ঠিক মতো কাজ করেনি। পাশাপাশি, আপৎকালীন পরিস্থিতিতে বেরিয়ে আসার পথ এবং সাধারণ প্রস্থান-পথ আলাদা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, আগুন লাগার ঘটনা ঘটলে দমকলকর্মীদের যাওয়ার পৃথক পথ নেই। সেই কারণে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে দমকলের ছাড়পত্র নেওয়ার কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। ভূমিকম্পের পরিস্থিতিতে তীব্রতা অনুযায়ী স্বয়ংক্রিয় উপায়ে যাতে পরিষেবা বন্ধ করা যায়, সেই ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে।

রিপোর্ট বলছে, উত্তর-দক্ষিণ (ব্লু লাইন) এবং নিউ গড়িয়া-রুবি (অরেঞ্জ লাইন) পথের যে সব যাত্রী এক দিক থেকে অন্য দিকের মেট্রো ধরবেন, তাঁদের যাতায়াতের পথ সঙ্কীর্ণ। এই সমস্যার সমাধানে ব্লু লাইনের আপ প্ল্যাটফর্ম থেকে অরেঞ্জ লাইনের স্টেশন পর্যন্ত একটি ফুটব্রিজ তৈরির পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

রেলওয়ে সেফটি কমিশনারের পরিদর্শনের সময়ে মেট্রোপথের বিভিন্ন স্তম্ভের পাইলিং পরীক্ষার রিপোর্ট জমা পড়েনি। কোনও সরকারি সংস্থাকে দিয়ে ওই পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয়েছে। ত্রুটি ধরা পড়েছে একটি স্তম্ভের বেয়ারিংয়ে। অনেক ক্ষেত্রে নকশা অনুযায়ী গার্ডার আর্চ আকৃতির হয়নি। যা গাফিলতি বলে মানছেন রেলওয়ে সেফটি কমিশনার। ওই সব গার্ডার পরীক্ষার নির্দেশ দেন তিনি। পরিষেবা শুরুর আগে ট্রেন চালানোর জন্য বিদ্যুতের জোগান দেওয়ার সাব-স্টেশন এবং থার্ড রেলে বিকিরণজনিত সমস্যা আছে কি না, তা দেখার জন্য ইলেক্ট্রিক্যাল ইনস্পেক্টর জেনারেলের ছাড়পত্র নিতে বলা হয়েছে।

স্টেশনের চলমান সিঁড়ি নিয়েও মতামত জানিয়েছেন কমিশনার। বলা হয়েছে, সব এসক্যালেটর রাখতে হবে সিসি ক্যামেরার আওতায়। স্টেশনের কন্ট্রোল রুম থেকে যাতে মনিটরে সেই ছবি দেখা যায়, তার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে চলমান সিঁড়ি নিয়ন্ত্রণের বন্দোবস্তও রাখতে হবে।

Advertisement
আরও পড়ুন