নতুন ঘরে মমি। সেখানেই প্রদর্শনীর তোড়জোড়। —নিজস্ব চিত্র।
বয়স তার কয়েক হাজার বছর। দেশান্তরীও হয়েছে প্রায় ২০০ বছর আগে। নতুন বছরে আবার ঠাঁই বদল হল ভারতীয় জাদুঘরের অন্যতম আকর্ষণ মিশরের মমির। তার পুরনো ঘরটির সংস্কার করা হবে। তাই জাদুঘরের দোতলার দক্ষিণ-পশ্চিম কোণের ঘর থেকে সোমবার মমিটিকে সরিয়ে আনা হয়েছে উত্তর-পশ্চিমের ঘরে। দু’টি ঘরের মধ্যে ব্যবধান কয়েক মিটার। কিন্তু আনুমানিক চার হাজার বছরের পুরনো ওই মমিকে অতি সতর্কতার সঙ্গে সরাতে ঘণ্টা পাঁচেক সময় লেগেছে।
১৮৩৪ সালে মিশরের একটি শহর থেকে লেফটেন্যান্ট ই সি আর্চবোল্ড ওই মমিটিকে
খুঁজে পান। মমিটি পুরুষ না মহিলার, তা নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। ১৮৩৪ সালে মমিটির ঠাঁই হয় এশিয়াটিক সোসাইটি মিউজ়িয়ামে। পরে ১৮৮৩ সালে তা আসে ভারতীয় জাদুঘরে।
পাঁচ দিক কাচ দিয়ে মোড়া বাক্সে মমিকে অতি যত্নে রাখা হয়। ভারতীয় জাদুঘরের অধিকর্তা অরিজিৎ দত্তচৌধুরী বলেন, ‘‘শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে মমিকে ২৪-২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় এবং ৬০ শতাংশের কম আর্দ্রতার মধ্যে রাখতে হয়। কাচের বাক্সে রাখা ‘সিলিকা জেল’ নিয়মিত পাল্টাতে হয়। অন্য ঘরেও এমনই আবহাওয়ার মধ্যে রাখা হয়েছে।’’ ভারতীয়
জাদুঘরের উপদেষ্টা পুরাতত্ত্ববিদ সত্যকাম সেন বলেন, ‘‘যত দূর মনে পড়ে, আগে জাদুঘরের একতলায় মমি থাকত। ১৯৮৯ সালে সেটিকে দোতলায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তার পরে এ বার ঘর বদলানো হল।’’ চলতি মাসেই সংস্কারের কাজ শেষ করে মমিকে ফেরানো হবে তার পুরনো ঘরে।
জাদুঘরের ২১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ১১ জানুয়ারি থেকে প্রত্ন সামগ্রীর পাশে থাকবে দেশ-বিদেশের শিল্প সামগ্রী। জাদুঘরের উপ-অধিকর্তা সায়ন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রদর্শনীতে এসে সবাই নিজের দেশ, ঐতিহ্যকে বুঝতে পারবেন।’’ আয়োজনে সঙ্গী সংস্থার কর্তা অভিষেক বসু বলেন, ‘‘প্রাচীন শিল্প সামগ্রীর পাশে বর্তমান সময়ের নির্বাচিত শিল্পীদের শিল্পকীর্তি উপস্থাপনের সুযোগ পেয়ে আমরাও গর্বিত।’’