Kolkata Doctor Rape-Murder Case

ধর্ষণ-খুনের সেই সেমিনার হলের পাশেই ঘর ভেঙে সংস্কারের কাজ! রহস্যের গন্ধ পাচ্ছেন কেউ কেউ

সোমবার থেকেই শুরু হয়েছিল আরজি কর হাসপাতালের সেমিনার হলঘরের পাশে ওই ঘর ভাঙার প্রক্রিয়া। কিন্তু, আচমকা কেন এই কাজ শুরু হল? উদ্দেশ্য কী? হাসপাতাল মহলেই এই সব প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ১৮:৩০
সেমিনার হলের পাশের ঘর ভাঙা হচ্ছে।

সেমিনার হলের পাশের ঘর ভাঙা হচ্ছে। —নিজস্ব চিত্র।

আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চার তলার সেমিনার হল এখন যাবতীয় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সেই হলঘরে ধর্ষণ এবং খুন করা হয় হাসপাতালের এক চিকিৎসক পড়ুয়াকে। ঘটনাস্থল যেখানে, তার পাশের ঘর ভাঙতে উদ্যোগী হলেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ! হঠাৎ কেন এই উদ্যোগ? প্রশ্ন উঠল হাসপাতালের অন্দরেই। জানা যাচ্ছে, মোট দুটি ঘর এবং একটি শৌচাগার ভেঙে নতুন একটি শৌচাগার তৈরির কাজ শুরু হয় সোমবার।

Advertisement

গত শুক্রবার সকালে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের চার তলার সেমিনার হল থেকে উদ্ধার হয় এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ। প্রথমে আত্মহত্যা বলা হলেও পরে উঠে আসে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগ। এ নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। তার মধ্যে হাসপাতালের সদ্যপ্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। সোমবার সেই সেমিনার হলেরই পাশের ঘর আচমকা ভাঙার কাজ শুরু করে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতালের একটি সূত্রে খবর, যে ঘরটি ভাঙা হচ্ছে, সেটি খুব একটা ব্যবহার হত না। কিন্তু, হঠাৎ ‘সংস্কারের’ কারণ কী? জানা যাচ্ছে, সন্দীপের নির্দেশেই ওই ঘর ভাঙার কাজ শুরু হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েক জন এবং কর্তৃপক্ষের একাংশ জানাচ্ছেন, আরজি করের ‘চেস্ট মেডিসিন’ বিভাগের সেমিনার হলের সামনে একটি ঘর ছিল। সেটাই ভাঙার কাজ শুরু হয় সোমবার। ওই কাজ চলছিল পুলিশের উপস্থিতিতে। যদিও সোমবারই ওই ঘর ভাঙার কাজ থমকে যায় জাতীয় মহিলা কমিশনের হস্তক্ষেপে। কারণ, আরজি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে সোমবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন কমিশনের কয়েক জন প্রতিনিধি। তাঁরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেওয়াল ভাঙা হচ্ছে দেখে সেই কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরজি কর মেডিক্যালের এক পদস্থ কর্তা এই ‘উদ্যোগ’ সম্পর্কে আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘গতকাল (সোমবার) থেকে ঘরটি ভাঙার কাজ শুরু হয়েছিল। হাসপাতালের অধ্যক্ষ (প্রাক্তন) সন্দীপ ঘোষের নির্দেশেই ওই কাজ হচ্ছিল শৌচাগার তৈরি হবে বলে।’’ কিন্তু ধর্ষণ এবং খুন যেখানে হল, তার অল্প দূরত্বে একটি ঘর ভাঙার জন্য এখনই কেন তাড়াহুড়ো শুরু হল? সেই প্রশ্নই উঠছে। আন্দোলনকারী পড়ুয়া-চিকিৎসকদের অনেকেরই প্রশ্ন, এই কাজের ফলে তথ্যপ্রমাণ নষ্টের কি কোনও সম্ভাবনা থাকে না? এমন একটি কাজে তদন্তকারীরাই বা কেন বাধা দিলেন না? পরে অবশ্য চিকিৎসক সংগঠন অভিযোগ তোলার পর ওই দুটি ঘর ভাঙা এবং সংস্কারের কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম।

উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে আরজি কর-কাণ্ডের তদন্তভার কলকাতা পুলিশের হাত থেকে নিয়েছে সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যে তদন্তপ্রক্রিয়া শুরু করেছে।

আরও পড়ুন
Advertisement